আসুন জেনে রাখি; নামাজ পড়া আয়াতগুলোর বাংলা অনুবাদ

আসুন জেনে রাখি; নামাজ পড়া আয়াতগুলোর বাংলা অনুবাদ
প্রতিনিয়ত নামাজ পরতে গিয়ে আমাদের মনোযোগ অন্য কথাও চলে যায়। নামাজে মনোযোগ দেবার অনেক উপায় আলেম-ওলামারা বলে থাকেন। তবে নামাজে আমরা যা পরি তার অনুবাদ যদি আমাদের সঠিকভাবে জানা থাকে তাহলে আশা করা যায় অন্য চিন্তা মাথায় আসবে না। আসুন জেনে নেওয়া যাক নামাজে পড়া আয়াতের অনুবাদগুলোঃ
নিয়ত করার পর, নামাজের মধ্যে আমরা কি পড়ি, তা বলছি-
১। নামাজে দাঁড়িয়েই প্রথমে আমরা বলি- ‘আল্লাহু আকবার’
অর্থ– আল্লাহ্ মহান!
২। তারপর পড়ি সানা। সানায় আমরা আল্লাহর প্রশংসা করি নিজের জন্য দুয়া করি।
‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবারাকাস্মুকা ওয়া তা’আলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা’।
অর্থ : হে আল্লাহ ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই ।
৩। তারপর আমরা শয়তানের প্রতারনা থেকে আশ্রয় চাই এবং বলি, আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির রাজিম ”।
অর্থ : বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৪। আল্লাহর পবিত্র নাম দিয়ে আল্লাহর দয়া করুণার গুন দিয়ে নামাজ এগিয়ে নিয়ে যাই। এবং বলি, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’
অর্থ : পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।
৪। এরপর আমরা সূরা ফাতেহা দিয়ে নামাজ শুরু করি (২ রাকাত/৪ রাকাত/৩রাকাত, ফরয/সুন্নত নিয়ম অনুযায়ী নামাজ পড়ি)
৫। আমরা রুকুতে আল্লাহ্-র উদ্দেশ্যে শরীর অর্ধেক ঝুঁকিয়ে দিয়ে মাথা নুয়িয়ে দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করি এবং ক্ষমা চাই, তিনবার বলি,
‘সুবাহানা রাব্বি-আল আজিম/সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম ওয়া বিহামদিহি’
অর্থ : আমার মহান রবের পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি।
৬। তারপর রুকু থেকে উঠে আমরা বলি– ‘সামি আল্লাহু লিমান হামিদা’
অর্থ : আল্লাহ সেই ব্যক্তির কথা শোনেন, যে তার প্রশংসা করে।
৭। তারপর পরই আমরা আবার আল্লাহর প্রশংসা করে বলি– ‘আল্লাহুম্মা ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’
অর্থ : হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা কেবল তোমারই।
৮। তারপর আমরা সমস্ত শরীর নুয়িয়ে দিয়ে মাথাকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট সিজদা দেই।
‘তিনবার বলি ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’
অর্থ : আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি
৯। দুই সিজদার মাঝখানে আমরা বলি,
‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি,ওয়ার হামনী, ওয়াহদীনি, ওয়া আফিনী, ওয়ার-ঝুকনী’।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমায় মাফ কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়েত দান কর, আমাকে শান্তি দান কর এবং আমাকে রিজিক বৃদ্ধি করো।
১০। সিজদা থেকে উঠে পড়ি- ‘আত্তাহিয়াতু’
‘আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্ সালাওয়াতু, ওয়াত্ তাইয়িবাতু। আস্সালামু আলাইকা আইয়ুহান। নাবীয়ু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া। আশহাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থঃ কি মৌখিক, কি দৈহিক, কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহর জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বধোন আল্লাহর জন্যে। সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং সল্কর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হােক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই, আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি।
মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।
১১। আত্তাহিয়াতুর পরে পড়ি-‘দরূদে ইব্রাহীম’
‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা ইবরাহীমা অ আলা আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিউল আলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বারাকতা আলা ইবরাহীমা অ আলা আ-লি ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি হজরত মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ কর, যেমন তুমি হজরত ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।
১২। দরূদে ইব্রাহিমের পরে পড়ি-দোয়া মাসুরা
‘আল্লাহুম্মা ইন্নী যলামতু নাফসী যুলমান কাসীরা। ওয়া লা ইয়াগফিরু। যুনূবা ইল্লা আনতা ফাফির লী। মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা। ওয়ার হামনী। ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।’
অর্থঃ হে আমার আল্লাহ! আমি আমার নফসের উপর অত্যন্ত যুলুম করিয়াছি, তুমি ব্যতীত পাপ মার্জনাকারী কেহই নাই। অতএব হে আল্লাহ্! অনুগ্রহ পূর্বক আমার পাপ ক্ষমা কর এবং আমার উপর দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি দয়াময় ও পাপ মার্জনাকারী।
পাঠকের মন্তব্য