বহু যুগের স্বপ্নপূরণ

পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধ পদ্মা সেতু

বহু যুগের স্বপ্নপূরণ

বহু যুগের স্বপ্নপূরণ

শুধুই কি স্বপ্ন পূরণ ? না এটি বহু যুগের স্বপ্নপূরণ। অবশেষে দেশবাসীর স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলল পদ্মাসেতু।

সেই মাহেন্দ্রক্ষণ শনিবার (২৫ জুন) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বললেন, পদ্মা সেতু আত্মমর্যাদা ও বাঙালির সক্ষমতা প্রমাণের সেতু শুধু নয়, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও।” আর পদ্মাসেতুতে প্রথম টোল দিলেন শেখ হাসিনা নিজে। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার উপর সেতু নির্মাণ বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের প্রযুক্তির ইতিহাসে নিঃসন্দেহে বড় মাইলস্টোন। 

মোট ৩০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া এই পদ্মাসেতুর কাজের চুক্তিমূল্য ছিল প্রায় ১২ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি তৈরি হতে সময় লেগেছে ৯০ মাস ২৭ দিন। দিনরাত খেটে কাজ করেছেন প্রায় ১৪ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার ও পরামর্শকের মধ্যে প্রায় এক হাজার ২০০ দেশি, দুই হাজার ৫০০ বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার। শ্রম দিয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ৫০০ দেশি শ্রমিক, আড়াই হাজার বিদেশি শ্রমিক এবং প্রায় ৩০০ দেশি-বিদেশি পরামর্শক।  
অবশেষে শনিবার সব শেষে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখলেন দেশবাসী। 

ঠিক কী কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে এতটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা সেতু ? বিশ্বের খরস্রোতা নদীর মধ্যে সবার প্রথমে রয়েছে আমাজন। এর উপর কোনও সেতু নেই। আর দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মা। প্রমত্ত পদ্মার উপর সেতু তৈরি অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল নিঃসন্দেহে। 
 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানোর ভিত্তি এখনও পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত এই সেতুর পাইল বসানো হয়েছে। ভূমিকম্প রুখতে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এ রকম আরও বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে নবনির্মিত পদ্মা সেতুর।

রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগে সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হয়েছে। রবিবার অর্থাৎ ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকেই শুরু হবে যানবাহন চলাচল।
  
প্রসঙ্গত, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু আরও কাছাকাছি আনলো ভারত-বাংলাদেশকে। বিশেষত কলকাতা আরও কাছে এলো। যেখানে কলকাতা-ঢাকা সড়কপথে যেতে কমপক্ষে ১৬ ঘণ্টা লাগত, পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে গেলে সাড়ে ছ’ঘণ্টাতেই পৌঁছনো যাবে। এই ইতিহাসিক কীর্তির জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত। 

পাঠকের মন্তব্য