সরঞ্জাম ব্যবহার করে খোলা হয় পদ্মা সেতুর নাটবল্টু

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ

পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খোলার ঘটনায় সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ কাজে গ্রেফতার বায়েজিদ তালহাকে আরো এক যুবক সহায়তা করেছেন। তার নাম কায়সার। তিনি পলাতক রয়েছেন। তাকে খোঁজা হচ্ছে।

সোমবার মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, পদ্মা সেতুর নাটবল্টু হাত দিয়ে খোলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করে জেনেছি, এত বড় একটা স্থাপনার নাটবল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না। কিন্তু ভিডিওতে দেখা গেছে খুব সহজেই খালি হাতে নাটবল্টু খোলা হচ্ছে। এটা সম্ভব নয়। নাটবল্টু খোলার জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। 

তবে কী ধরনের সরঞ্জামা দিয়ে নাটবল্টু খোলা হয়েছে, সে প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি সিআইডির এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ঘটনার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ এখন আমরা পাইনি। ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আমরা অনেক তথ্যই পেয়েছি কিন্তু সব তথ্য গণমাধ্যমের সামনে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। যে তথ্যগুলো আমরা শুধু নিশ্চিত হতে পেরেছি, সেগুলো আমরা গণমাধ্যমকে বলছি। তদন্তে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।

কীভাবে পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুললেন বায়েজিত সে প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বায়েজিদ ও তার বন্ধু কায়সার প্রাইভেটকারে করে পদ্মা সেতুতে যান। বায়েজিদ গাড়ি ড্রাইভ করছিলেন। জাজিরা প্রান্তের ৩০-৩৫ নম্বর পিলারের মধ্যে নেমে তিনি ও তার বন্ধু রেলিংয়ের নাটবল্টু খুলে ফেলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। পরে বায়েজিদ ও কায়সার দুটি ভিডিও নিজেদের টিকটক অ্যাকাউন্টে আপলোড করেন।’

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বায়েজিত নাটবল্টু খোলার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান রেজাউল মাসুদ।

বায়েজিদের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মামলার এজাহারে কি কি আলামত দেখানো হয়েছে, জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে, সেটা মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে নাটবল্টু এখনো উদ্ধার করা হয়নি, সে কারণে মামলায় এগুলো আলামত হিসেবে দেখানো হয়। এগুলো উদ্ধার সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে আলামত হিসেবে দেখানো হবে।

বায়েজিদের অপরাধ বিষয়ে সিআইডির কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, সামাজিক মাধ্যমে নাটবল্টুর ভিডিওটি ছড়িয়ে তিনি মূলত পদ্মা সেতু নিয়ে তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করেছেন। এটা অন্তর্ঘাতমূলক অপরাধ। তিনি সাধারণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন এবং রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।

পদ্মা সেতু সাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দিনে (রোববার) ৩৪ সেকেন্ডের একটি টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয়। 

ভিডিওতে দেখা যায়, বায়েজিদ তালহা সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। ভিডিও ধারণকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।’

নাট হাতে নিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের...পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’

পাঠকের মন্তব্য