শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি)

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি)

সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার 'অভিযোগে' জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মিতু মনি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) মাঝরাতে নিজ হলের সিনিয়রদের দ্বারা অকথ্য গালিগালাজ ও মানসিক হেনস্তার শিকার হন মিতু ও তার সহপাঠী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আফরিন। প্রাধ্যক্ষ বরাবর মিতুর দেয়া লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা গেছে, রাত ২টায় রুমে ফেরার পর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়লে হঠাৎ জ্ঞান হারান মিতু। এম্বুলেন্সে করে মিতুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।

এদিকে, র‍্যাগিং এর ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীকেই হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে জানানোর আগেই সাংবাদিকদের কেনো 'অভিযোগ' দেয়া হলো-জানতে চেয়ে ভুক্তভোগী মিতু মনিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ।

এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মিতু বলেন, সাংবাদিকরা হয়তো কোনো সোর্স থেকে এ তথ্য পেয়েছিলেন। যখন তারা আমাকে ফোন করে জানতে চান আমি তাদেরকে পুরো ব্যাপারটা বলি। এখানে আমার দোষ কোথায়? সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়া কি দোষের?

শোকজের প্রেক্ষাপট জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, 'ওই মেয়ে আমার অফিসে অভিযোগ দেয়ার আগেই সাংবাদিকদের অভিযোগ দিছে৷ এটা সে কীভাবে করে ?'

এ সময় তিনি আরও বলেন, 'তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওই মেয়েকে শোকজ করা হয়েছে। সে তো এই কাজ করতে পারে না।' তবে, ঠিক কী ধরণের তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে শোকজ করা হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি এই হল প্রাধ্যক্ষ।

এদিকে, অভিযুক্তের বিচার না করে উল্টো ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়াকে 'প্রহসনমূলক' বলছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ ও নিজেদের টাইমলাইনে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

পাঠকের মন্তব্য