কর্ম ব্যস্তময় ছিলো জাতির পিতার শেষ দিনটি ১৪ আগস্ট

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হওয়ার আগের দিন, ১৪ আগস্ট ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি কর্মব্যস্ত দিন। ওই দিন একটি বিদেশি রাষ্ট্র প্রধানের বিশেষ দূত, মন্ত্রী, সরকারী কর্মকর্তা এবং দলীয় নেতাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কথা শুনেছেন বঙ্গবন্ধু।
প্রধানমন্ত্রী হয়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কখনো সরকারি বাসভবন গণভবনে থাকতেন না। সাদামাটা জীবনযাপন করতেন বলেই তিনি পরিবারের সাথে থাকতেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে।
১৯৭৫ এর ১৪ আগস্ট ছিলো বৃহস্পতিবার। সকাল ঠিক ৯টায় গণভবনে আসেন বঙ্গবন্ধু।
সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করতে আসেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত। সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেন তথ্য ও বেতারমন্ত্রী। বেলা ১১টায় এক সাথে বঙ্গবন্ধুর রুমে ঢোকেন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিমানবাহিনী প্রধান। এরপর বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বিকেল ৪টার দিকে বন্ধু নিয়মিত হাঁটতেন গণভবন প্রাঙ্গণে। লেকের পারে বসতেন, মাছের খাবার দিতেন।
১৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যখন বঙ্গবন্ধু লেকের পারে বসে ছিলেন তখন অনির্ধারিতভাবে সেখানে আসেন তথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর।এরপর শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী, পানি সম্পদমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতও লেকের পারেই বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেন।
এরপর বিকেল ৬ টায় ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব। বঙ্গবন্ধুর দুই স্নেহভাজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম ও ফরাসউদ্দিন আহমদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়া উপলক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিলো গণভবনে। সেটিতে অংশ না নিয়ে রাত ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশ্যে গণভবন ছেড়ে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
পরদিন ১৫ আগস্ট সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়াসহ নানা কর্মসূচি ছিলো। কিন্তু ভোরের সূর্য ফোটার আগেই ঘাতকদের নিষ্ঠর বুলেট সপরিবারের কেড়ে নেয় স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে।
পাঠকের মন্তব্য