পাহাড়ি জঙ্গিদের সব আস্তানা গুঁড়িয়ে দিলো র্যাব-সেনাবাহিনী

র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন
র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, গহীন পাহাড়ি এলাকায় থাকা জঙ্গিদের সব আস্তানা র্যাব ও সেনাবাহিনী গুঁড়িয়ে দিয়েছে। র্যাব-সেনাবাহিনীর ঘেরাওয়ের কারণে জঙ্গিরা সীমান্ত এলাকায় যেতে পারছে না, আবার সমতলেও আসতে পারছে না। আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, অনেক তরুণ বাড়ি থেকে পালিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ বান্দরবানের গহীন পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাব-সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে নব্য জঙ্গিরা সেখানে এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গভীর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। তাদের একজন না খেয়ে মারা গেছে, অপর একজন আত্মসমর্পণ করেছে।
খুরশীদ হোসেন বলেন, আত্মসমর্পণ করা তরুণ জানিয়েছে, সে ১০ দিন যাবৎ ভাত খায়নি। বান্দরবানে র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে এসব তরুণ সীমান্তের কাছে যেতে পারছে না, আবার সমতলেও আসতে পারছে না।
আজ বুধবার দুপুরে র্যাব-১১’র জব্দ করা প্রায় ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ ধ্বংস কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে নারায়ণগঞ্জে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আদালতের নির্দেশে আজ দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত র্যাব-১১’র প্রধান কার্যালয় চত্বরে ডিজির উপস্থিতিতে মদগুলো ধ্বংস করা হয়।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌস, অন্যান্য ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এটিই র্যাব-১১’র মাদক ধ্বংসের প্রথম ঘটনা।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, গত আগস্ট মাসে র্যাব জানতে পারে কুমিল্লার সাত তরুণ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছে। তদন্ত করে দেখা যায়, ৭-৮ জন নয় বরং ৫৫ জন নিখোঁজ হয়েছে। পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ৩৫ জন নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানতে পারে সমতলে সুবিধা করতে না পেরে তারা বান্দরবানের গহীন রামুতে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে জঙ্গিবাদের উত্থান হলেও বর্তমানে সমতলে সুবিধা করতে না পেরেই তারা বান্দরবানের রামুর গহীন এলাকায় চলে যায়। সেখানে হেঁটে যেতে হয়। তারা সেখানে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব সেখানে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার এবং ২১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
এ সময় তিনি বলেন, সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সমাজের সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই বিদেশ থেকে দুটি তৈরি পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানের মেশিনারিজের নামে আমদানি করা ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অবৈধ উপায়ে ছাড়িয়ে দুটি কন্টেইনারে করে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোল প্লাজায় র্যাব-১১’র একটি দল চালানটি আটক করে।
ওই ঘটনায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামের দুই ছেলেসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁ থানায় র্যাব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
পাঠকের মন্তব্য