কণ্ঠশিল্পী আকবরের মৃত্যুতে যা বললেন হানিফ সংকেত 

হানিফ সংকেত ও কণ্ঠশিল্পী আকবর

হানিফ সংকেত ও কণ্ঠশিল্পী আকবর

২০০৩ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি গেয়ে পরিচিতি লাভ করেছিলেন কণ্ঠশিল্পী আকবর। পেশায় তিনি ছিলেন রিকশাচালক।

২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। তার গান শুনে বাগেরহাটের একজন মুগ্ধ হয়ে ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

‘হাত পাখার বাতাসে’সহ আকবরের গাওয়া বেশ কিছু গান একসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০০৮ সালে আকবরের মা মারা যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনো নতুন গান প্রকাশ পায়নি। তার একমাত্র মেয়ে আছিয়া আকবর অথই এবং দুই ছেলে কামরুল ইসলাম ও মহরম।

রবিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কণ্ঠশিল্পী আকবর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

কণ্ঠশিল্পী আকবরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন- উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক হানিফ সংকেত। তিনি লিখেছেন, আজ দুপুরে আকবরের স্ত্রী হঠাৎ ফোন করে অঝোরে কাঁদছিলো, বললো- ‘আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গ্যাছে’। ফোনটা যখন পাই তখন আমি রংপুরে পরবর্তী ইত্যাদির জন্য একটি প্রতিবেদন ধারণ করছিলাম। 

প্রজন্মকণ্ঠ পাঠকের জন্য হানিফ সংকেত এর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- 

আজ দুপুরে আকবরের স্ত্রী হঠাৎ ফোন করে অঝোরে কাঁদছিলো, বললো- ‘আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গ্যাছে’। ফোনটা যখন পাই তখন আমি রংপুরে পরবর্তী ইত্যাদির জন্য একটি প্রতিবেদন ধারণ করছিলাম। 

ফোন পেয়েই বুঝেছিলাম আকবর আর নেই। কারণ বেশ কিছুদিন থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিলো না। ক্রমশই অবনতি হচ্ছিলো। নিয়মিত খোঁজ রাখছিলাম। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা হচ্ছিলো। লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস-সবকিছু মিলিয়ে শারীরিক অবস্থা ছিলো অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। নেয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। অবশেষে জীবনের কঠিন সত্য মৃত্যু (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

তবে এটুকু সান্ত্বনা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আকবরের চিকিৎসার কোন ত্রুটি হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং আর্থিক সহায়তাও দিয়েছিলেন। এছাড়াও অনেকেই তাকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

আকবরের সংগীত জীবনের উত্তরণের পথটা সহজ ছিলো না। ২০০৩ সালে যাত্রার পর থেকে অনেকটা একাই ওকে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। আকবর খুব বেশি গান করেনি। তবে যে কটা করেছে তা সব প্রজন্মের শ্রোতাদের আবেগ-অনুভূতি ছুঁয়ে গ্যাছে-যা তাকে বাঁচিয়ে রাখবে অনেক দিন। 

আকবরের এই অকাল মৃত্যুতে আমি শোকাহত। আকবরের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

ফেসবুক স্ট্যাটাস লিঙ্ক- Hanif Sanket 

পাঠকের মন্তব্য