পুলিশ প্রটোকলে নয়; ইউএনও'র গাড়ি না থাকায় এগিয়ে দিলেন ওসি

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)  ইউএনও'র গাড়ি কেড়ে নিলেও সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে পদন্নোতি কারণে প্রিয় কর্মস্থল ত্যাগ করলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান।  

প্রকৃত উপকার ভোগীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বিতরণ, নিষ্ঠা, সততা আর আন্তরিকতা দিয়ে বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন দ্বীপচর রাঙ্গাবালীর মানুষের মনে। ইউএনওর গাড়ি চলার সময় স্থানীয়রা কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাস্তা ঘাট, হাট ও বাজার এবং খেয়াঘাটে শতশত মানুষ দাড়িয়ে থেকে তাকে বিদায় জানান।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাঙ্গাবালী উপজেলা চত্বর থেকে পুলিশের গাড়িতে ছোট্ট সোনামনি নিয়ে তাকে বিদায় দিলেন ওসি। 

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, আমি চেষ্টা করেছি, সাধারণ মানুষ আমার সাথে সরাসরি কথা বলতো বন্ধুর মতো। সাধারণ মানুষ যখন কান্নায় ভেঙে পড়েছে সত্যি আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। রাঙ্গাবালীর সাধারণ মানুষের কথা আমার জীবনভর মনে থাকবে। 
 
ইউএনও মাশফাক শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) হিসেবে পদন্নোতি পেয়ে ১ ডিসেম্বর দায়িত্ব ভার হস্তান্তর করেন। বদলিজনিত কারণে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বিদায়ী সংবধনার আয়োজন করা হয়। এছাড়া শুক্রবার সকালে রাঙ্গাবালী থানা কম্পাউন্ডে এক সংবধনা শেষে দীর্ঘদিন রাঙ্গাবালী উপজেলায় ইউএনও ও নির্বাহী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমানকে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তার শিশু কন্যা সহ তার গাড়িতে করে ঘাঠ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। 

স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ প্যাদা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ইউএনও স্যার একজন মাটির মানুষ ছিলেন। তার কাছে যেতে আমাদের কখনও অনুমতির দরকার হয়নি। 

রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা খোকন বলেন, স্যার (ইউএন) প্রকৃত উপকার ভোগীদের মাঝে মুজিববর্ষের ঘর বিতরণ করেছেন। আমরা তার জন্য দোয়া করি। 

রাঙ্গাবালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের একটিমাত্র গাড়ি, যেটা নিয়ে সহকারী কমিশনার কাজে গেছেন। রাঙ্গাবালী থানায় আমরা তাকে বিদায়ী সংবধনা দিয়েছি। 

ইউএনও যেহেতু মোটরসাইকেল যোগে কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটে রওনা দিয়েছেন। তাই আমি তাকে আমার শিশু কণ্যা সহ আমার গাড়িতে করে ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। 

তিনি আরও বলেন, একজন কর্মকর্তা যে সাধারণ মানুষের কাছে এতোটা জনপ্রিয় হয় কি ভাবে তা সত্যি ইউএনও মহাদয়কে ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে না দিলে বুঝতাম না। পুরাটা পথ তিনি গাড়ি থামি থামিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। 

রাঙ্গাবালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালেক মুহিদ বলেন, ‘যেহেতু উপজেলা পরিষদে একটি মাত্র গাড়ি। সেটা সাময়িকভাবে বিকল থাকায় চালক আমার সঙ্গে রয়েছে। তাই ইউএনও স্যারকে গাড়ি দিতে পারিনি।

   


পাঠকের মন্তব্য