আজ ৬ ডিসেম্বর : ভারতের স্বীকৃতি লাভ ও ঐতিহাসিক নবযাত্রা

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৬ ডিসেম্বর

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৬ ডিসেম্বর

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৬ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন প্রথম দেশ হিসেবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। লোকসভার অধিবেশনে এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দানের ঘোষণা করেন।  

এসময় লোকসভার সদস্যরা দাঁড়িয়ে ইন্দিরা গান্ধীর ঘোষণাকে স্বাগত জানান। একইসঙ্গে লোকসভার অধিবেশনে হর্ষধ্বনির সঙ্গে 'জয় বাংলা' স্লোগান উচ্চারিত হয়। এদিন ইন্দিরা গান্ধী অধিবেশনে তার বক্তব্যে বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানি স্বৈরতান্ত্রিক ও গণহত্যা নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো।' 

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভারতের সিদ্ধান্ত সোভিয়েত ইউনিয়নকে জানানো হয়। এর আগের দিন ৫ ডিসেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নিজেদের কর্মনীতি সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিলে ভারত বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দানের বিষয়টি চূড়ান্ত করে।

এদিন ভারত বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দানের কয়েক ঘণ্টা পরেই কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হোসেন আলী বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন৷ এরপর তিনি তার বক্তব্যে বলেন, 'বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর বীর সৈনিকেরা যেভাবে এগিয়ে এসে বাংলাদেশকে বিজয়ের দিকে অগ্রসর করেছেন তা অতুলনীয়৷ বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে তাদের ত্যাগ ও রক্তের ফলে যে বন্ধন গড়ে উঠেছে তা চিরকাল অটুট থাকবে।'

এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায় এবং পাকিস্তানের পরাজয় আসন্ন হয়ে পড়ে। আর এ কারণেই স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের যাত্রায় এক অনন্য ও ঐতিহাসিক দিন আজ।

এই দিনেই দেশব্যাপী যৌথবাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধের মাধ্যমে ফেনী, যশোর, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও লালমনিরহাট জেলা সর্বপ্রথম হানাদার মুক্ত হয়।

   


পাঠকের মন্তব্য