গলাচিপা পৌর আ'লীগের সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে রনো  

দীর্ঘদিন পরে রাজনীতির মাঠে নেতাকর্মীরা সরব হয়ে উঠেছেন। আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর গলাচিপায় পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। পদ প্রত্যাশীরা দৌড়ঝাপে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন বিলবোর্ড, ব্যানার টাঙ্গানো শুরু হয়েছে উপজেলা জুড়ে।

গলাচিপা পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এবার পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সভাপতি পদে আছেন নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, সাবেক পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কর্মীবান্ধব নেতা মাইনুল ইসলাম রনো। পদ প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে তার নামই বেশি আলোচিত হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, তিনি সবসময়ই ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে গলাচিপা উপজেলায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে শক্ত ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। রাজপথে রাজনীতি করে বেড়ে ওটা একজন জনপ্রিয় ত্যাগি নেতা হিসেবে পরিচিত। একজন ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির বিনয়ী এই নেতাকে পৌর আ-লীগের সভাপতি হিসাবে দেখতে চেয়ে তৃনমূলসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর বর্তমান সদস্য মাইনুল ইসলাম রনো একজন আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক মৃত মো: নুরুল ইসলাম মিয়া। তিনি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ও আমৃত্যু উপদেষ্টা, সাবেক গলাচিপা ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত সফল চেয়ারম্যান। সামাজিক ক্ষেত্রে ছিলেন তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে। এছাড়াও গলাচিপা উপজেলা বি.আর.ডি.বি সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। আন্দোলন সংগ্রামে রেখেছেন সক্রিয় ভুমিকা। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন থেকে সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় সংগঠক হিসেবে অংশগ্রহন ছিলো তার।

তেমনি করে পিতার আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে স্কুল জীবন থেকেই পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যে মাইনুল ইসলাম রনোর রাজনীতি শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮৯ সালে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত গলাচিপা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি রেড ক্রিসেন্ড এর গলাচিপা উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি, গলাচিপা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক (১৯৮৮ -১৯৯০) সাল। 

৯০ এর স্বৈরচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, বিএনপি জামাত জোট সরকাররের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে তিনি রাজ পথের একজন প্রতিবাদী আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে বহুবার অত্যাচার , জুলুম, ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে কারাভোগ করেছেন। এছাড়াও সামাজিক জীবনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্টানসহ সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে রয়েছে তার অসংখ্য অবদান।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ভালোবেসে জননেত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে ৯০ দশক থেকে সততা আর সাহসিকতার সাথে রাজনীতি করে আসছেম ক্লিন ইমেজের এই নেতা। দীর্ঘ ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থেকে এলাকায় দলের সকল রাজনৈতিক কর্মকন্ডে প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহন করেছেন। বিপদে -আপদে জনগনের পাশে দাড়িয়েছেন। তিনি একজন কর্মীবান্ধব নেতা, কর্মীদের মনের ভাষা বোঝেন। শত শত নেতা কর্মী যার হাত ধরে রাজনীতি করা শিখেছে। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি থেকেছেন সামনের সারিতে। দিয়েছেন সফল নেতৃত্ব। দল ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ। জনবান্ধব এবং পরীক্ষিত ও লড়াকু সৈনিক। 

ফলে তৃনমূল নেতা-কর্মীদের ভরসা পাত্র হয়ে দাড়িয়েছেন সবসময়। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন রয়েছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয়লাভের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তারুণ্যের প্রতীক এ ব্যক্তি বিগত সালে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল ও অবরোধ ঠেকাতে মাঠে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। চরম বির্পযয়ের মধ্যেও উপজেলা ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করে রেখেছিল। 

শুধু এখানেই তিনি ক্ষান্ত নন, গরীব-দুঃখী ও অসহায়দের পাশে আছেন। ইতিমধ্যে তিনি নেতৃত্ব ও জনসেবার মাধ্যমে জয় করেছেন সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা। তার নিজস্ব মনোবল ও একান্ত প্রচেষ্টায় তিনি রাজনৈতিক অঙ্গণে এ পর্যন্ত এসেছেন। তার সহধর্মিণী হাফিজা ইসলাম নিপাও যুক্ত রয়েছেন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে। তিনি সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং গলাচিপা পৌরসভার দুইবারের নির্বাচিত সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (৭,৮ ও ৯) মহিলা কাউন্সিলর ছিলেন। 

সভাপতি প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রনো বলেন, 'আমি স্কুল জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বর্তমানে আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে ও বর্তমান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে এবং পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এস এম শাহজাদা এমপির দিকনির্দেশনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের পরামর্শে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।' 

তিনি আরও বলেন, 'রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে মানুষের বিপদে আপদে জনপ্রতিনিধি হিসেবে পাশে আছি। কখনো নিজেকে নেতা হিসাবে মনে করিনি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। কখনও ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। আশা করি আসন্ন গলাচিপা পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলীয় সমর্থনে নেতৃবৃন্দ আমাকে মূলয়ায়ন করবে।'

প্রসঙ্গত, গলাচিপা পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর। সর্বশেষ পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে। তাই সামনের সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীরা সরব হয়ে উঠেছেন।

পাঠকের মন্তব্য