রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। সমাবেশের এক দিন আগেই দলটির নেতাকর্মীরা রাজধানীর প্রতিটি রাস্তার অলিগলিতে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) মিছিল, শোডাউন ও মহড়া করে জানান দিচ্ছেন রাজপথে নিজেদের উপস্থিতির কথা। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়েরনেতারা। তারা নেতাকর্মীদের রাজপথের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।

বিএনপির পূর্ব ঘোষিত সমাবেশের আগে থেকে দু-দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বাগযুদ্ধ, হুমকি-ধমকি চলছিল। গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরো জটিল করেছে। সংঘর্ষে একজন সাধারণ মানুষ মারাও গিয়েছে। 

আগামীতে এ ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা যাতে না হয় সেদিকে কঠোর নজরদারি আওয়ামী লীগের। তাই ১০ ডিসেম্বর সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বিরোধীদের শক্ত অবস্থান ঠেকাতে তৎপর ক্ষমতাসীন দল। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেই ইঙ্গিতও দিয়েছে। আর ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার থেকেই মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে মিছিলসহকারে অবস্থান নেন। বিশেষ করে পল্টনের আশপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতকর্মীদের অবস্থান লক্ষণীয়। এর মধ্যে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতারা মাঠে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এ ছাড়া রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় ছোট-বড় মিছিল দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। শোডাউন করেছেন রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে। পিকআপ-মোটরবাইকে চড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় ঘুরছেন নেতাকর্মীরা। ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘বিএনপির দালালরা হুশিয়ার, সাবধান’- এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়। মিছিল- শোডাউনে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ মহানগরের নেতাদের অংশ নিতে দেখা যায়। আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরাও।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সরব অবস্থানে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করতে ও মহড়া দিতে দেখা গেছে কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের।

সকাল সাড়ে আটটায় ঢাবির মধুর ক্যানটিন প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ক্যাম্পাসের টিএসসি এলাকা, শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, পলাশী চত্বর এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে তারা মহড়া দেন।

দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য এবং বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদে রাজধানীর জুরাইনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কর্মী ড. আওলাদ হোসেন নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মুহুর্মুহু সেøাগানে মুখরিত ছিল বিক্ষোভস্থল। কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশ মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে হবে। উত্তরেও রয়েছে বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম।

এদিকে সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকম-লীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা, সহযোগী সংগঠনসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দুই সিটি মেয়রের যৌথ সভা হয়েছে। এ সভায় আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে বিএনপির সমাবেশ।

সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, গত মঙ্গলবার বিএনপি নয়াপল্টনে লাশ ফেলার দূরভিসন্ধি কার্যকর করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থায় থাকবে। ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে বিএনপি এই সরকারকে হটানোর চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে আমরা দেশকে তুলে দিতে পারি না। এটা আমাদের শপথ। আক্রমণ আমরা করব না, তবে আক্রান্ত হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আমরা সরকারি দল, মাথা ঠা-া রাখতে হবে। আমাদের যেন কোনো বদনাম না হয় আক্রমণকারী হিসেবে।

   


পাঠকের মন্তব্য