পাইকগাছায় খুঁশি নার্সারীতে নানা রঙ বেরং এর ফুলের সমারোহ

লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফুল চাষীরা

লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফুল চাষীরা

পাইকগাছায় বাণিজ্যিক ভাবে  শুরু হয়েছে ফুল চাষ। আর ফুল চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। উপজেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘরে এসকল তথ্য উঠে এসেছে। সরজমিনে গদাইপুর খুঁশি নার্সারীতে দেখা যায় এখন নানা জাতের রঙ বেরং এর ফুলের সমারোহ। ফুলের হাসিতে ভরে উঠেছে ক্ষেত।

ফুল কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেও চাষ হচ্ছে ফুলের। ভালবাসার প্রতিক ফুল৷ শ্রদ্ধা নিবেদন, অভ্যর্থনা আর একে অন্যের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ফুল অন্যন্য৷ শীত মৌসুমে ফুল চাষের উপযুক্ত সময়। আর সারা বছরে ফেব্রুয়ারী মাসকে ঘিরে ফুলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশী দেখা যায়৷ এ মাসেই ফুলের দিবস আর ভালবাসা দিবসসহ একুশে ফেব্রুয়ারি দিন রয়েছে৷ আর শীতের এ মাস ঘিরে ফুল চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফুল চাষীরা। 

খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর নার্সারী জন্য দেশ খ্যাত। গদাইপুর এলাকা থেকে ফলদ, বনজ ও ঔষধী গাছের চারা ট্রাক, পরিবহন ও অনালাইনে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হয়। উপজেলায় প্রায় চার শতাধিক নার্সারী রয়েছে। গদাইপুর খুশি নার্সারীতে ফুল, ফলদ, বনজ ও ঔষধী গাছের চারা উৎপাদন ও বিক্রিয় করা হচ্ছে। এখানে ইস্টেবেরি, ড্রাগন, থাইকুল, আপেলকুল, বলসুন্দরি কুল, থাইআপেল কুলসহ বিভিন্ন জাত। কালো মরিচ, কালার ফুজি মরিচ, ব্যানানা মরিচ, ক্যাপসিক্যাম, আঙ্গুর, আপেল, বেদানা, মিস্টি জলপাই, আমলকি, বিভিন্ন জাতের পেয়ারা, বারি মালটা, আম, জামসহ শতাধিক প্রজাতির গাছের কলম পাওয়া যায়। এখন শীতের সময় রং-বেরং এর নানা ফুল।    

গদাইপুর ইউনিয়নের খুশি নার্সারীতে গেলে দেখা মিলবে নয়ন তারা, ডালিয়া, জিনিয়া, ড়ায়াস্থাস, কসমস, চন্দ্রমল্লিকা, ইকরা গাধা, সেলসোলিয়া, পুতলিকা, সূর্যমুখি ইন্ডিয়ান গোলাপ, কালার গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা গাঁদা ফুলসহ দৃষ্টিনন্দন ফুলে সমারোহ। প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী-মার্চ পযর্ন্ত কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় ফুল চাষিদের। ক্ষেতে চারাসহ জারবেরা ফুল ২০ টাকা, গ্লাডিওলাস, গোলাপ, নয়নতারা, সেলসোলিয়া, পুর্তলিকা, সূর্যমুখি ১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৩০, ইন্ডিয়ান গোলাপ, কালার গোলাপ ৪০ টাকা, ডালিয়া ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

প্রতিদিন ক্ষেত থেকে ফুলসহ চারা বিক্রি হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও ফুল প্রেমিরা বাড়িতে ও ছাদে ফুলের গাছ লাগাতে চারা ক্রয় করছে। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সরকারি-বেসরকারি অফিসে ফুলের বাগান করতে এসব নার্সারী থেকে ফুলসহ চারা সরবরাহ করা হয়। খুঁশি নার্সারীর মালিক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, প্রায় ১৫ বছর নার্সারীতে চারা উৎপাদন ও বিক্রি করছেন। ৫ বিঘা জমিতে তার নার্সারীর ক্ষেত। নার্সারীতে ফলদ, বনজ, ঔষধী গাছের চারা ও প্রায় ৫ শতক জমিতে ফুলের চারা তৈরি করেন। ছোট রেনু চারা এনে প্যাকেট বা টবে লাগিয়ে ফুলের গাছ তৈরি করা হয়। গাছে ফুল ধরলে বা ফুটলে চারা বিক্রি করা হয়। শীতের সময় ফুলের চাষের জন্য জায়গার পরিমাণটা বাড়ে। এবার ফুলে দাম ভালো হওয়ায় অধিক লাভের আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফলদ, বনজ ও ঔষধি চারার নার্সারীর জন্য জেলার উল্লেখযোগ্য স্থান গদাইপুর। শীত মৌসুমে এসব নার্সারীতে কিছু কিছু ফুলের চাষ হচ্ছে। ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিদের ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি কর্মকর্তারা। আমাদের পক্ষ থেকে চাষিদের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং ফুল চাষের বিভিন্ন পরামর্শও দেয়া হচ্ছে।

   


পাঠকের মন্তব্য