পাখি ও লাল কাঁকড়ার রাজত্ব; পটুয়াখালীর ‘চরবিজয়’
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিক্ষেণের সাগরকন্যাখ্যাত উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী। এ জেলায় রয়েছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি খ্যাত সাগরকন্যা কুয়াকাটা।
পটুয়াখালীর দক্ষিণ উপকূলে গত কয়েক দশকে জেগে উঠেছে বেশ কিছু চর। এসব চরের সৌন্দর্য্যও অপরূপ। এরমধ্যে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠা বিশাল সম্ভাবনাময় নতুন একটি চরের নাম 'চরবিজয়'।
প্রায় ১০ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠা এ চরটি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। লাল কাঁকড়ার অবাধ ছুটোছুটি আর অতিথি পাখির কলকাকলিতে মূখর থাকে এ চর। দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জল রাশি আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের পাড়ে।এছাড়া সাদা গাঙচিলের দল এদিক-ওদিক উড়ে যাচ্ছে। এমন অপরূপ দৃশ্য মন কেড়ে নিবে যেকোনো পাষন্ড মানবেরও।
বসতিহীন এ চরে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই লাল কাঁকড়ার দল ছুটে পালিয়ে যায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। গর্তে লুকিয়ে থেকেও উঁকি দিয়ে পর্যটকদের গতিবিধি লক্ষ্য করে কাঁকড়াগুলো, যা বিমোহিত করে পর্যটকদের। ইতোমধ্যে এ দৃশ্য দৃষ্টি কেড়েছে পর্যটকদের। এ চরের অপরূপ দৃশ্যের প্রেমে পড়েছেন দর্শনার্থীরা।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে চরটির সন্ধান পাওয়া যায় বলে এর নাম রাখা হয় ‘চরবিজয়’। বর্তমানে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা বর্ননা শুনে মূগ্ধ হয়ে একনজর দেখার জন্য ছুটে যাচ্ছেন চর বিজয়ে।
চরবিজয়ে ঘুরতে আসা পর্যটক শুভ ও শিহাব জানান, "চরটি পাখি ও লাল কাকঁড়ার দখলে থাকা একটি দ্বীপ, এ যেন আরেক সেন্ট মার্টিন।যেকোনো মানুষকে এটি বিমোহিত করবে। কুয়াকাটায় এসে যদি চর বিজয়ে না আসা হয় তবে অপূর্ণতা থেকেই যাবে।"
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এ চরের সন্ধান পাওয়া যায়। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে এর নাম রাখা হয় ‘চরবিজয়’। এরপর থেকেই কুয়াকাটায় আগত পর্যটক, স্থানীয় ব্যাবসায়ীসহ বিভিন্ন মানুষ চর বিজয়ে যান। তবে সরকার যদি এই দ্বীপকে ঘিরে পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগ নেয় তবে এটি কুয়াকাটার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে।
কুয়াকাটা পর্যটন ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক রুমি শরিফ জানান, উপকূলীয় এলাকার দ্বীপ ও চর উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদেরও দৃষ্টি দরকার। যদি সী-বোট সহ আধুনিক জাহাজে এসব চর ঘুরে দেখার সুযোগ তৈরি করা যায় তবে তা দ্রুত সেন্টমার্টিনের মতো জনপ্রিয়তা পাবে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চরবিজয়’ বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রের আওতায় রয়েছে। যদিও চরটি এখন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে বসবাসের উপযোগী হয়নি তবে ওখানে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে স্পীডবোট চালু রয়েছে। পাশাপাশি ট্রলারে মাধ্যমে পর্যটকরা যাচ্ছে। এটাকে আরও উন্নত করার জন্য আমরা কাজ করছি যাতে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ে।
পাঠকের মন্তব্য