ভারত জুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে আজ ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস

ভারত জুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস

ভারত জুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস

ভারত জুড়ে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হচ্ছে ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী দিল্লির বিজয়চকে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল, জাতীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গরকড়ি, অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা, বিজেপি সভাপতি জে.পি নাড্ডাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা, ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, দেশটির তিন বাহিনীর (স্থল, বিমান, নৌ) প্রধান এবং দিল্লিতে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশী দূতাবাসের প্রধানরা। 

এবছর প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাতেহ আল-সিসি। 

এদিন সকাল ১০.০৫ মিনিটে দিল্লিতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া শহীদ ভারতীয় সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সাথে ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধানরা। এরপর সেখান থেকে ১০.২২ মিনিট নাগাদ দিল্লীর কর্তব্য পথে (গত বছরই দিল্লির রাজপথের নাম পরিবর্তন করে কর্তব্য পথ রাখা হয়) আসেন প্রধানমন্ত্রী। কিছু পরেই ১০.২৫ মিনিট নাগাদ সেখানে পৌঁছান উপরাষ্ট্রপতি এবং ১০.২৭ মিনিট নাগাদ প্রধান অতিথি থেকে অতিথিকে সাথে নিয়ে সেখানে এসে পৌঁছন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি। এরপর সেখানে দেশটির জাতীয় পতাকা (তিরঙ্গা) উত্তোলনের মধ্য দিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। 

এরপর ২১ টি গান স্যালুট ও জাতীয় সংগীত বেজে ওঠে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ। দিল্লির বিজয় চক থেকে রেড ফোর্ড পর্যন্ত এই পথে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের কসরত ছিল দেখার মতো। এর পাশাপাশি দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও এই কুচকাওয়াজে ফুটে উঠেছিল। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সুসজ্জিত ট্যাবলো বের করা হয়। দু'বছর পর এবার দিল্লির কুচকাওয়াজে অংশ নেয় পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো- যার থিম ছিল দুর্গাপূজা।

প্রধানত এই দিনেই শক্তি প্রদর্শন করে দেশটির সেনাবাহিনী। এই বারই প্রথম এই প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেয় মিশরের সেনাবাহিনীর ১৪৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রায় এক ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানে দেশটির জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় সময় ১২.১০ মিনিট নাগাদ এই অনুষ্ঠানের সমাপনী হয়।

প্রজাতন্ত্র দিবসের সময় যেকোনো নাশকতা ও হামলার আশঙ্কায় দিল্লিসহ আশপাশ এলাকা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। 

দিল্লির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, শ্রীনগর, উত্তরাখান্ড, মহারাষ্ট্র, মিজোরাম, গুজরাট, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানসহ প্রতিটি রাজ্যে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়। জম্মু-কাশ্মীরের কারগিলে-১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 

এদিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কলকাতার রেড রোডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জি, পৌর বিষয়ক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অর্থ দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পর্যটন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট অতিথি ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ বিভিন্ন উপ-দূতাবাসের প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।  

এর আগে রেড রোডে পুলিশ মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এবার রেড রোডে রাজ্য সরকারের তরফে যে ট্যাবলোগুলি প্রদর্শন করা হয় তার মধ্যে অন্যতম ছিল দূর্গা পূজা সম্পর্কিত একটি ট্যাবলো।  

   


পাঠকের মন্তব্য