নেত্রকোণার বারহাট্টায় নামে মাত্র পার্ক;  চলছে দিনভর বেহায়াপনা

নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার শেষ সীমান্ত

নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার শেষ সীমান্ত

নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার শেষ সীমান্তে রয়েছে একটি নামে মাত্র শিশু পার্ক প্রতিদিন সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে বেহায়াপনা। প্রেমিক-প্রেমিকাদের একান্ত ঘনিষ্ঠ সময় কাটানোর জায়গা। ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কিংবা এধরণের দিবসে প্রেমিক–প্রেমিকাদের সংখ্যা বেড়ে হয়ে যায় কয়েক গুন। 

জেলার বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জ দুই উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে সিংধা ইউনিয়নের নুরুল্লাচর গ্রামে অবস্থিত ডিজনি চিলড্রেন পার্ক। গেইটে ৫০ টাকার মাধ্যমে টিকেট কেটে একবারেই পার্কে প্রবেশ করলে সারাদিন থাকা যায়। প্রবেশের পর পার্কের ভিতর শিশুদের জন্য শুধুমাত্র কয়েকটি দোলনা আর ২/৩ কি রাইডা ছাড়া চোখে পড়ার মতো আর কিছুই নেই। পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ঘর ঘরের চারদিকে ঘেরাও পুকুরে। আর পুকুরের পানি যতই নোংরা হোক না কেন চার পাশে রয়েছে ঘনগাছ ও বসার জন্য পাকা ছোট ছোট বসার স্থান (বেঞ্চ)।

পার্কের ভেতরে প্রবেশ করলে যে দিকে নজর পড়বে সে দিকে দেখা যায় প্রেমিক-প্রেমিকারা ভালোবাসায় ও আদর সোহাগে মগ্ন রয়েছে। কার পাশ দিয়ে কে আসলো আর কেইবা গেল সেদিকে নজর দেওয়ার মতো কোনো সময় নেই তাদের। যে যার মত করে প্রেমলীলায় মেতে থাকতে দেখা যায়। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বেশী দেখা যায় এই স্থান গুলোতে।

স্থানীয় লোকজন জানায় ভদ্র পরিবারের কেউ এ পার্কে একবার যদি ভুলক্রমে প্রবেশ করে পুনরায় আর কোন দিন সেখানে যাবার নাম মুখেও পর্যন্ত নিবে না। নামে শিশু পার্ক হলেও শিশুদের চেয়ে উঠতি বয়সের যুবক –যুবতীরা প্রবেশ করে বেহায়াপনায় লিপ্ত হয়ে থাকে।  যা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করার মত নয়। 

পুরো পার্কের ভেতরে প্রেমিক প্রেমিকারা আর পার্কের লোকজন ছাড়া শিশুদের তেমন একটা চোখে পড়ে না । শিশু পার্কের ভিতরে প্রেমিক-প্রেমিকারা হাতে হাত, কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সকলেই জুটি মিলিয়ে বসে হাতাহাতি থেকে শুরু করে আপত্তিকর অবস্থায় বেশি দেখা যায়।স্থানীয়রা এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে পার্কটি শিগগিরই বন্ধের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গত কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। উক্ত পোস্টে সচেতন মহলে ক্ষোভ, তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ব্যাপক ঝড় তোলে।

তারই প্রেক্ষিতে স্থানীয় এক যুবক গণমাধ্যমকর্মীদের জানায় পার্কটি তার চাচা নুরুজ্জামান সালাম শিশুদের বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরী করেন। কিন্তু উল্লেখিত পার্কটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালিত হয় বলে তিনি জেনেছেন। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে পার্কে ঢুকে অশ্লীল কার্যক্রমে লিপ্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন কিছু বললে পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করে। স্থানীয় লোকজন নিরীহ ও সহজ সরল থাকায় তারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারে না। তিনি আরো জানান যে, তিনি এলাকায় থাকেন না এলাকায় আসলে তার কাছে স্থানীয়রা এসে এর প্রতিবাদ জানায় এবং এর প্রতিকার চায়।

এ ব্যাপারে পার্কের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, এখানে অশ্লীল কোন কাজ হয় না, যে ভিডিও টি ভাইরাল করা হয়েছে , তা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। পার্কের প্রতিষ্ঠাতা নুরুজ্জামান সালাম একজন ভালো মানুষ, সংস্কৃতিমনা মানুষ। পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা নুরুজ্জামান সালাম এর সাথে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বারহাট্টা থানার ওসি লুৎফুল হক বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি তবে এ ব্যাপারে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো আমরা ৷

   


পাঠকের মন্তব্য