সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী; কমেছে ডিম ও কাঁচা মরিচের দাম

সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর কাঁচা বাজার

সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর কাঁচা বাজার

সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর কাঁচা বাজারে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কমেছে ডিম ও কাঁচা মরিচের দাম। সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। চিনি, আটা-ময়দা বাড়তি দামেই আটকে আছে। এর মধ্যে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে যার কেজি ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। 

বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম প্রতিকেজি ১১শ টাকা। আর বকরির মাংস ৯০০ টাকা।

এদিকে, টানা তিন সপ্তাহ ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম একটু কমেছে। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২০০ টাকা।  

ডিম বিক্রেতা মো. আশিক বলেন, ফার্মের মুরগির ডিমের দাম একটু কমেছে। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। অন্য ডিম আগের দামেই আছে। অপরদিকে মাছের বাজার উত্তাপ। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছ কেজিতে বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দামও বেড়েছে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।

শেওড়াপাড়া বাজারে ক্রেতা ফজলুল হক বলেন, আমাদের মতো হিসাব করে চলা মানুষ আর গরুর মাংস খেতে পারবে না। কমদামে ব্রয়লারও এখন কেনা যায় না। মাছের দামও বেড়েছে। আমরা এখন কী খাবো ?

মিরপুর ৬ নম্বর কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম প্রজন্মকণ্ঠকে বলেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খাসির মাংসের দাম ১০০ থেকে দেড়শ টাকা বেড়েছে। মানুষ মাংস কিনছে কম। বিশেষ করে খাসির মাংসের ক্রেতা একদমই নেই।

গরুর মাংস বিক্রেতা হারুন রশীদ প্রজন্মকণ্ঠকে বলেন, গত মাসে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এখন ৫০ টাকা বাড়তি। সপ্তাহখানেক আগেও ২০-৩০ টাকা কমে বিক্রি করা গেছে। এখন যাচ্ছে না।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের পাঙাশ-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হতো ১৫০-১৬০ টাকা, যা এখন ১৮০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা। যা আগে ১৮০-২০০ টাকায় কেনা যেত।

রামপুরা বাজারে রিকশাচালক কুমার দাশ প্রজন্মকণ্ঠকে বলেন, দিনে ৬০০-৭০০ টাকা কামাই, এর মধ্যে যদি ২৫০ টাকায় মাছ কিনি, তাহলে অন্য খরচ কী দিয়ে হবে?

মাছ বিক্রেতা খালেক জানান, তার দোকানে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকায়। যা আগে ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন। অন্যান্য চাষের মাছ বেশ বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ২৮০-৩২০ টাকা ছিল।

অন্যদিকে বাজারে দেশি প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি, বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০-৮০০ টাকা। যা ছিল ৬০০-৬৫০ টাকার মধ্যে। তবে এসব মাছ চাষের হলেও কিছুটা কম দামে মিলছে।

আরেক মাছ বিক্রেতা জালাল মিয়া প্রজন্মকণ্ঠকে বলেন, সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামের প্রভাব মাছের বাজারেও পড়েছে। সে কারণে দাম বেড়েছে।

অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল, চিনি, আটা, ময়দা, গুঁড়া দুধসহ অন্যান্য বেশকিছু পণ্য বাড়তি দামে আটকে রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ৯০-৯৫ টাকা ছিল। একইভাবে প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ৯৫-১০০ এবং মাসকলাইয়ের ডাল ১৫৫-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি এসেছে তাতে হাত দেওয়ার অবস্থা নেই। প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২২০ টাকা দরে।

   


পাঠকের মন্তব্য