পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত

পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত

পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত

যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দিবাগত রাতে, বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে সৌভাগ্য ও ক্ষমার রজনী পবিত্র শবে বরাত। আরবি শব-ই-বরাত অর্থ ভাগ্য রজনী। মুসলিমগণের বিশ্বাস অনুসারে, এ রাতে আল্লাহ তায়ালা তার সকল সৃষ্টির অতীত আমলের হিসাব নিয়ে আগামী বছরের জন্য তাদের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেন।

ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীরা এই রাতে নামাজ পড়েন, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন, নিজের ও সমগ্র মানবজাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন। তারা রাতের খাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের, বিশেষ এবং ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খাবার তৈরি করেন। বাংলাদেশের ঐতিহ্য হলো, হাতে তৈরি রুটি, মাংস, হালুয়াসহ নানা পদের মিষ্টি খাবার। এ সব খাবার প্রতিবেশী-আত্মিয়দের মধ্যে বিতরনের প্রথাও আছে মুসলিম ঐতিহ্যে।

এদিকে শবে বরাত উপলক্ষে সকাল থেকেই রাজধানী পুরান ঢাকার বিভিন্ন গলিতে হরেক রকম হালুয়া-রুটির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল পড়তেই কেনাকাটা শুরু করেছেন বাসিন্দারা। 

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর ও  চকবাজার এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

এ দিনটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বেকারিতে তৈরি হয়েছে বাহারি নকশার পাউরুটি, সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের হালুয়া। হালুয়ার মধ্যে রয়েছে পেঁপে, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, ডাল, ময়দা, সুজি, নেশেস্তা গাজরসহ বিভিন্ন প্রকারের হালুয়া।

চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান বলেন, প্রতিবছর এদিনটি আমরা উৎসবের মতো করে পালন করি। ছোটবেলায় গ্রামে থাকাকালীন সময়ে এদিনে চালের রুটির সঙ্গে হালুয়া নিয়ে মসজিদে যেতাম এবং সবাই মিলে নামাজের পরে সেগুলো বিতরণ করতাম। কিন্তু শহুরে জীবনে তো এটা কল্পনাও করা যায় না। তাই প্রতিবছর বিভিন্ন রকমের এসব রুটি হালুয়া দিয়েই সবাই মিলে শবে বরাত পালন করে থাকি আমরা। 

পুরান ঢাকার আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, শবে বরাতে রুটি-হালুয়া বিতরণের ধর্মীয় কোনো তাৎপর্য নেই। তবে নামাজ রোজার পাশাপাশি ঘরে ভোজের আয়োজন এবং দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমাদের সামাজিক সম্পর্ক ও ভালোবাসার আদান-প্রদান ঘটে।

এদিকে পবিত্র শবে বরাত কে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকায় আতশবাজি ফোটানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। 

 মঙ্গলবার দিবাগত সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা, এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। রাজধানীতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

পাঠকের মন্তব্য