মোরেলগঞ্জে ঘের দখলকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত ২৫

১৫ বিঘা জমির একটি মৎস্য ঘের দখল

১৫ বিঘা জমির একটি মৎস্য ঘের দখল

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৫ বিঘা জমির একটি মৎস্য ঘের দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলা ও মারপিটে নারী ও শিশুসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন। মারপিটের এ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের বাইনতলা গ্রাামে। 

হামলায় আহতরা হলো আব্দুল খালেক হাওলাদার, শহিদুল ইসলাম, আব্দুল হালিম হাওলাদার, আবু হানিফ হাওলাদার, আব্দুল কাদের হাওলাদার, মো. মানিক হাওলাদার, শাহিনুর বেগম, মিরাজ মল্লিক, মুরাদ হাওলাদার, রবিউল ইসলাম, আব্বাস ফরাজী, আক্কাস ফরাজী, আব্দুল সালাম হাওলাদার, নুর মোহাম্মদ শেখ, হাফিজা বেগম, রুবি বেগম, সেলিনা বেগম, চয়ন হাওলার, জাকির শেখকে, রাজু খান, রাকিব শেখ, রুম্মান ও ইমরাজ। 

এদের মধ্যে গুরুতর আহত হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থায় আব্দুল খালেক হাওলাদার, আব্দুল হালিম হাওলাদার, আবু হানিফ হাওলাদার, আব্দুল কাদের হাওলাদার, মানিক হাওলাদার, মুরাদ হাওলাদারকে, মিরাজ মল্লিক, শাহিনুর বেগমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদেরকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ও এমপির নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও ঘেরটি নিয়ে বড় ধরণের মারপিটের ঘটনা ঘটনায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, বাইনতলা গ্রামের ১৫ বিঘা জমির মৎস্যঘেরটির মধ্যে ওই গ্রামের আ. হালিম হাওলাদার ও তৈয়ব আলী হাওলাদারের নিজস্ব জমি রয়েছে। তৈয়ব আলী আ. হালিম হাওলাদারের জমির হাড়ির টাকা না দিয়ে সেখানে কয়েক বছর ধরে ঘের করে আসছে। এ নিয়ে আ. হালিম থানা পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও এমপির মনোনীত শালিশগণ ঘটনাটি নিষ্পত্তির জন্য ৮-১০ বার শালিশ বৈঠক করে মিমাংসায় ব্যার্থ হয়। 
 
সোমবার তৈয়ব আলীর পক্ষ হয়ে শতাধীক লোক ওই ঘেরে ভেকু মেশিন দিয়ে ভেরি বাধ দিতে যায়। এ সময় আবদুল হালিম ও তার লোকজন বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করে তৈয়ব আলীর লোকজন। এক পর্যায়ে আবদুল হালিমের লোকজন ঘের সংলগ্ন নুর মোহাম্মদ শেখের বাড়ির মধ্যে আশ্রয় নিলে তৈয়ব আলীর লোকজন ওই বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদেরকে এলোপাতরী মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এ হামলায় আ. হালিম হাওলাদের পক্ষের নারী শিশুসহ ২০ জন আহত হন।  

এ ঘটনার জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ও জিউধরা ফাঁড়ি পুলিশের আইসি এসআই সুফলকে দায়ী করছেন অনেকে। গুরুতর আহত আ. হালিম হাওলাদার ও তার স্বজনেরা জানান, মিজানের নেতৃত্বে মারপিট করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কোন ভূমিক নেয়নি। অপরদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য থানা পুলিশের এসআই জহির দায়ী। তার উস্কানীতে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। 

বিবাদমান এই ঘেরটি নিয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. তাজিনুর রহমান পলাশের অফিসে প্রায় ১৫ দিন পূর্বে সর্বশেষ শালিশ বৈঠক হয়। সেখানে সাদা কাগজে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও আওয়ামী লীগ নেতা মিজান জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আহতদেরকে হাসপাতালে পাঠাতে পুলিশ সহযোগিতা করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

   


পাঠকের মন্তব্য