জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে প্রধান ঈদ জামাত

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। 

সাড়ে ৮টায় প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ উৎসব আমেজে নামাজ আদায় করবেন। 

নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জাতীয় ঈদগাহে এ জামাতের আয়োজন করছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঈদগাহে পৌঁছালে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস তাঁকে স্বাগত জানাবেন। এ জামাতে মহিলা ও বিদেশী কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। মুসল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠান করার লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহে সকল প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের স্থানসহ ঈদগাহ মাঠের গোটা প্যান্ডেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশীর পর আর্চওয়ে দিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হবে।

প্রধান এ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহ ময়দানে সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবেন। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাতের সার্বিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস সাংবাদিকদের বলেন, ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ প্যান্ডেলে ১২১ কাতারে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি (নারী-পুরুষ) ঈদের জামাতে শরিক হতে পারবেন। এছাড়াও প্যান্ডেলের বাইরে চারপাশের রাস্তাগুলোতেও আরও অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন।

তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান ঈদ জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনৈতিকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং ঢাকাবাসীকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাতে পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।

এ সময় জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সাথে করে দিয়াশলাই বা লাইটার জাতীয় কোনো বস্তু না আনার আহ্বান জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে এবং তীব্র তাপদাহ রয়েছে। সুতরাং সকলকে এ ব্যাপারে সচেতন-সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। দয়া করে কেউ কোনো দিয়াশলাই অথবা লাইটার জাতীয় কোনো বস্তু আনবেন না। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে। সতর্ক থাকবে। তাই সকলকে বিনয়ের সাথে আহ্বান করছি - আপনারা কেউ এ ধরনের বস্তু আনবেন না।’

জাতীয় ঈদগাহে সবাইকে নামাজ আদায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহিলাদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে তেমনি বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নামাজ শেষে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় যেন কোনো হুড়াহুড়ি না হয়, সে কারণে বের হওয়ার জন্য আমরা পর্যাপ্ত পথ রেখেছি। ঝড়-বৃষ্টি হলে ভিতরে যেন পানি ঢুকতে না পারে সে জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং আমরা সবাই মিলে খুব সুন্দর একটা পরিবেশে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করব। ঢাকাবাসীসহ সবাইকে আহ্বান জানাব -আপনারা আসবেন। জামাতে অংশগ্রহণ করবেন। আমরা একই সাথে সকলে মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব।’

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউেন্ডশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন ক্বারী মো. ইসহাক মুয়াজ্জিন।

দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়, ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান। 

তৃতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়, এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী ইমাম হিসেবে থাকবেন এবং মুকাব্বির হিসেবে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান থাকবেন। 
চতুর্থ জামায়াত হবে সকাল ১০টায়। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. এহসানুল হক ইমাম হিসেবে থাকবেন এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের চীফ খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম।

এছাড়া ৫টি জামায়াতে নির্ধারিত কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা  মো. মুজাহিদ আল সাফিদ বাসসকে জানান, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ হাজার ৭৭টি মসজিদ ছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ২৭০টি স্থানে  কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

   


পাঠকের মন্তব্য