ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা

সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা

দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ভিজিএফ চাল আত্মসাতের অভিযোগে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় রংপুর। 

গত ১৬ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ নুর আলম চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট  আমলে নিয়ে ফৌজদারী কার্যবিধিতে রংপুরের স্পেশাল জজ (জেলা জজ) আদালত, বিচার কার্যক্রম শুরু করেছেন। দুদকের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলাটির ২নং আসামী সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে র‌্যাব-১৩ এর একটি অভিযান পরিচালনাকারী দল ৩০ মে ২০১৯ তারিখে ১৯ হাজার ৮শত টাকাসহ হাতে নাতে আটক করেন। 

আসামী সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা উক্ত টাকা কোথায় কি ভাবে পেয়েছেন বা ১নং আসামী আনছারুল হকের গোডাউন ঘর থেকে সরকারী ভিজিএফ চাল উদ্ধারের সময় সেখানে তিনি কেন গেলেন? সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কোন বক্তব্য দিতে পারেনি। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রমাণিত হয় যে, সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আত্মসাতকৃত চালের টাকা আনতে গিয়েছিলেন। 

২নং আসামী সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক অসদাচারণ এর মাধ্যমে ৮ লাখ ৫২ হাজার ১২০টাকা মূল্যের দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ভিজিএফ চাল আত্মসাতের বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়। যা দন্ডবিধি ৪০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা ও আনছারুলকে। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, বাদশা মিয়া, সাইদুল হক, রেজাউল এবং সুমন চন্দ্র রায় কেশবপুর পালিচড়া। 

দুদকের দেয়া চার্জশিট সূত্রে  জানা গেছে, র‌্যাব-১৩ এর ডিএডি রবিউল আলম বাদি হয়ে দন্ডবিধির ৪০৬/৪০৯/৪২০/৩৪ ধারা তৎসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ সনের ২৫(১)/২৫ (ঘ) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলাটি দুর্নীতি দমন আইন, ২০০৪ এর তফশীলভুক্ত হওয়ায় কোতয়ালী থানার ওসি গত ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় রংপুর এ প্রেরণ করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে রংপুর দুদকের তৎকালিন উপসহকারী পরিচালক মোঃ নুর আলমকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি স্বপরিবারের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন এছাড়া প্রশিক্ষণ, অভিযান, নৈমেত্তিক ছুটি, আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদানসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বিলম্ব হয় মর্মে উল্লেখ করেন। 

তদন্তকালে দুদক তদন্ত কর্মকর্তা নুর আলম জব্দ তালিকার স্বাক্ষী, জব্দকারী কর্মকর্তা এবং পূর্ববর্তী জব্দকারী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন জনের বক্তব্য গ্রহণ করেন এবং তা পর্যালোচনা করেছেন। এদিকে, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯-এর-৩৪ এর (১) উপ-ধারা (৪) মোতাবেক সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা ফৌজদারি মামলার আসামী এবং তার অপরাধ আদালত আমলে নিয়েছে এ কারণে সোহেল রানাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য রংপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন সাংবাদিক মামুন অর রশিদ। 

রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন জানিয়েছেন, আবেদন পেয়েছি। সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত সত্য হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানিয়ে দেয়া হবে। 

 

   


পাঠকের মন্তব্য