পেঁয়াজের দাম নিয়ে ফের কারসাজি; দেখার কেউ নেই

পেঁয়াজের দাম নিয়ে ফের কারসাজি; দেখার কেউ নেই
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ টন। এক মাসের চাহিদা ২ লাখ টন। আর এক দিনের চাহিদা ৬ হাজার ৬৬৬ টন বা ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৬ কেজি। সেক্ষেত্রে এক কেজিতে দিনে ৪০ টাকা বাড়ালে এক দিনে ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত যাচ্ছে ২৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এ হিসাবে ৩০ দিনে ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে ৮১২ কোটি টাকা।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে ফের কারসাজি চলছে। মাসজুড়ে কেজিতে ৪০ টাকা বাড়িয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অস্বাভাবিক এই মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রী আমদানির আশ্বাস দিলেও এখনো বাজার পর্যবেক্ষণ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে অসাধু চক্র এক মাসে ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত ৮১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে এই মুহূর্তে পেঁয়াজের সংকট নেই। সুযোগ বুঝে অসাধু চক্র সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। মনে হচ্ছে চক্রটিকে ভোক্তার পকেট কাটতে সুযোগ করে দিচ্ছে নীতিনির্ধারকরা। অসাধুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনো উদ্যোগ নেই। পাশাপাশি ভোক্তার স্বার্থে এখন পেঁয়াজ আমদানি করে মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে-মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এপ্রিলের শেষ দিকে যখন পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা, তখনও সব স্তরের ব্যবসায়ীরা নিজেদের মুনাফা ধরে তা বিক্রি করতেন। হঠাৎ করে মে মাসের শুরুর দিকে এর দাম কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি শুর হয়। ওই সময়ে চক্রটি কারসাজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অসাধুরা যে কোনো অজুহাতে ভোক্তার পকেট কাটে। সুযোগ পেলেই সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতি মুনাফা করে। তারা চিহ্নিত। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ কারণে অসাধুরা বারবার একই পন্থায় ভোক্তার পকেট কাটে।
তিনি জানান, দেশে বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ আছে। আমরা চাই কৃষক লাভবান হোক। পেঁয়াজের বাড়তি মূল্য কৃষক পাক। কিন্তু এ মুহূর্তে ভোক্তার স্বার্থও দেখতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়ে দেশে পণ্যটির মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য