দেশে ডলার সংকট, লোডশেডিং ও সময়ের বাস্তবতা  

দেশে ডলার সংকট, লোডশেডিং ও সময়ের বাস্তবতা  

দেশে ডলার সংকট, লোডশেডিং ও সময়ের বাস্তবতা  

বাংলাদেশে ডলারের এমন অবস্থার জন্য করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীনে করোনার পুনরায় আগমনকে দায়ী করা হয়। ডলার সংকট দেখা দেওয়ায় গত ৬ মাস ধরে কয়লার বিল পরিশোধ করা হয়নি। ফলে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কয়লা বাবদ প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বকেয়া হয়। 

যদি আপনি মাসে ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, আপনার এনার্জি বিল (ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া ছাড়া) প্রথম ৭৫ ইউনিট (৭৫×৪.৮৫) = ৩৬৩.৭৫। পরবর্তী ২৫ ইউনিট (২৫×৬.৬৩) = ১৬৫.৭৫ এতে মোট বিদ্যুৎ বিল =  ৫২৯.৫০ টাকা। 

১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ গড় উৎপাদন খরচ ১০০ ইউনিট (১০০×১৬.) = ১৬০০ টাকা
  
আপনি পরিশোধ করেছেন- ৫২৯.৫০ টাকা আর উৎপাদন খরচ-বিক্রি বাবদ প্রাপ্য  লোকসান হয় (১৬-৫২৯.৫০) = ১০৭০.৫০ লোকসান সরকার মাসে আপনাকে ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দিতে ১০৭০.৫০ সাবসিডি দিয়ে আসছেন। তাহলে আপনার জন্য সরকার প্রতি বছর, ১২,৮৪৬.০০  সাবসিডি দেয় কারন আপনি এই দেশের নাগরিক। এই সাবসিডি দিতে গিয়ে কয়লার বিল বাকী পড়ে। 

শুধু তাই নয়, সরকার লক্ষ লক্ষ সেচ গ্রাহককে বিলের শতকরা ২০ টাকা রেয়াত দিয়ে আসছেন। ৫০০০.০০ বিল হলে তাঁর ১০০০.০০ মওকুফ। অপরদিকে হাজার হাজার মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডাকে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ দেয়। 

এছাড়াও সরকার যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ দেয়। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বহুবার চাপ সৃষ্টি করেও বিদ্যুৎ থেকে সাবসিডি বন্ধ করতে পারে নাই। এটাই বাস্তবতা। 

আজ কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। গত ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হলেও এবার পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল। ফলে সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। 

বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, 'বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এতে নতুন করে কয়লা সরবরাহ শুরু হবে। তবে কয়লা আসতে অন্তত ২০-২৫ দিন সময় লাগবে। এ সময় বন্ধ থাকবে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন। এরপর কয়লা এলে জুনের শেষ সপ্তাহে আবারও উৎপাদন শুরু হবে।'

-প্রজন্মকণ্ঠ পরিবার  

   


পাঠকের মন্তব্য