বাংলাদেশে ইংরেজি বর্ষবরণে হামলার ছক বানচাল : পরিকল্পনা ফাঁস

টার্গেট পর্যটকরা৷ ভিড়ের মাঝে ছুরি দিয়ে একের পর এক আঘাতে বহুজনকে খুনের বড়সড় হামলার ছক ফাঁস হয়েছে৷ ধরা পড়েছে জেএমবি জঙ্গিরা৷ জানা গিয়েছে, জাতীয় নির্বাচন চলাকালীন বর্ষশেষের রাত্রিতে প্রবল রক্তপাত ঘটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল সীমান্ত সংলগ্ন মায়ানমার থেকে আনা ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে৷ কমান্ডোদের ব্যবহার করা ছুরি ‘কোল্ড আর্মস’ নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়তে তৈরি হয়েছিল জঙ্গিরা৷ উদ্ধার করা হয়েছে তেমনই অনেক অস্ত্র৷
বুধবার ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত তিন জেএমবি জঙ্গির নাম- আব্দুল হাকিম, নোমান ও শফি। এদের মধ্যে নোমান জেএমবির কক্সবাজার এলাকার আঞ্চলিক প্রধান৷ তাদের কাছ থেকে ৩০টি কমান্ডো নাইফ উদ্ধার করা হয়৷ সেই ডেরায় মিলেছে দেড় কেজি বিস্ম্ফোরক, ৩০টি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)৷ এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কোল্ড আর্মসের চালান বাজেয়াপ্ত করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সিঙ্গেল টার্গেট কিলিং মিশনে কমান্ডোরা এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেন। বাংলাদেশেও একাধিকবার কোল্ড আর্মস ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা৷ সেই ছুরি দিয়েই ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মতো হামলার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা৷
দুনিয়ার অন্যতম সৈকত শহর তথা পর্যটকদের প্রিয়স্থান কক্সবাজার৷ বঙ্গোপসাগরের তীরে বছরের বিভিন্ন সময় এই সৈকত শহরে পর্যটক সমাগম লেগেই থাকে৷ বাংলাদেশি ছাড়াও ভারতীয় ও বিভিন্ন দেশের অনেকই কক্সবাজার-টেকনাফ সংলগ্ন এলাকায় ঘুরতে আসেন৷ আর ইংরাজি বর্ষবরণের রাতে হয় বেশি ভিড়৷ সেই সময়েই হামলা চালিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে একসঙ্গে অনেককে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷
জেরায় এই তিন জঙ্গি জানিয়েছে, চোরাই পথে মায়ানমার থেকে বিশেষ কমান্ডো ছুরি ‘কোল্ড আর্মস’ তারা বাংলাদেশে এনেছিল৷ মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব থেকে কয়েকজন এই চালানোর জন্য প্রচুর অর্থ ঢেলেছে৷
পুরো পরিকল্পনা অনেকটা এরকম : একাধিকবার উগ্র ইসলামিক চিন্তায় আচ্ছন্ন ও আইএস মদতপুষ্টরা বারেবারে হামলা চালিয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়৷ পর্যটকরাই তাদের লক্ষ্য৷ সবথেকে বড় ঘটনার একটি হল ২০০২ সালে বালি বিস্ফোরণ৷ এতে নাইট ক্লাবে ঢুকে হামলা চালায় জঙ্গিরা৷ নিহত হন ২০০ জনের বেশি৷ তারপরেও বিভিন্ন সময় হামলা চালানো হয়েছে, আর অনেকের মৃত্যু হয়েছে৷
বালি দ্বীপের হামলার মতো কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে বর্ষ শেষ ও বরণের রাত্রে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে খুনের পরিকল্পনা নেয় জেএমবি৷ এই পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চিন্তা বেড়েছে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের৷ এমনিতেই জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে চলতি বছর বর্ষবরণের রাতে জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷
পাঠকের মন্তব্য