আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতিস্বীকার করল মায়ানমার

অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতিস্বীকার করল মায়ানমার৷ শেষমেশ রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্ত করতে সামরিক আদালত গঠন করল বার্মিজ সেনা৷ সোমবার এক বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানিয়েছেন মায়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং৷

২০১৭ সালে রাখাইন প্রদেশে বেশ কয়েকটি পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা জঙ্গিরা৷ তারপরই সন্ত্রাসদমন অভিযানে নামে সে দেশের সেনাবাহিনী৷ গোটা রাখাইন প্রদেশ জুড়ে শুরু হয় সামরিক অভিযান৷ অভিযোগ, জঙ্গিদের নির্মূল করার নাম সংখ্যালঘু বাংলাভাষী রোহিঙ্গাদের উপর প্রবল নির্যাতন চালায় সরকারি বাহিনী৷ নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ করা হয় রোহিঙ্গাদের৷ জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ঘর-বাড়ি৷ শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে৷ ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’র পর্যায়ে ফেলেছে রাষ্ট্রসংঘ৷ 

বার্মিজ সেনাপ্রধান ও পাঁচ জেনারেলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন অনুসারে গুরুতর অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে বিচার করারও সুপারিশ করে রাষ্ট্রসংঘের তদন্তকারী দল। এই সমস্ত অভিযোগের বিচার চলবে সামরিক আদালতে৷ সেনা সূত্রে খবর, একজন মেজর জেনারেল ও দু’জন কর্নেলকে নিয়ে আদালতটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ কারণ, এর আগেও একবার রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্ত করে বার্মিজ সেনা৷ এবারে সকল অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করা হয়৷ 

এদিকে সামরিক আদালত গঠন বার্মিজ সেনার একটি ছলনা বলে অভিযোগ জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক নিকোলাস বেকুইলিন৷ তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক চাপ ঠেকাতে এটি মায়ানমার সেনাবাহিনীর একটি চাল। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করলেও এখনও পর্যন্ত ওই বাহিনীতে সংস্কারের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।” সব মিলিয়ে সামরিক আদালত গঠন করা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ 

পাঠকের মন্তব্য