‘আতাগাছে তোতাপাখি’ নিয়ে টানাটানি তৃণমূল-বিজেপি'র

‘আতাগাছে তোতাপাখি’
প্রায় ১০০ বছর ধরে বাঙালি শিশুদের জনপ্রিয় ছড়া। শিশুর মুখে কথা ফুটলে দাদু-ঠাকুমারা এই ছড়াটাই বোধহয় প্রথম শেখান নাতি-নাতনিদের। আদো আদোভাবে নাতি-নাতনিরা যখন আতাগাছে তোতাপাখি, ডালিম গাছে মউ, বলে তখন আনন্দ যেন ধরে না বাড়ির বড়দের।
যতীন্দ্রনাথ সরকারের সেই ছড়াই এখন ভোটের ময়দানে বড়দের বুলি হয়েছে। তৃণমূল-বিজেপি আতাগাছে তোতাপাখি নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে। যুযুধান দুই দলই তাদের প্রচারে এই ছড়াকে ব্যবহার করছে। ভাবখানা যেনে নিজেরাই লিখেছে ছড়া। ভাগ্যিস এই ছড়ার কপিরাইট উঠে গিয়েছে। না হলে ছড়া নিয়ে হয়তো নির্বাচন কমিশন বা আদালতে টানাটানি পড়ে যেত। ছোটবেলায় শেখা সেই ছড়া এখন বহু জায়গায় দেওয়াল লিখনে দেখা মিলছে।
আসানসোল থেকে বর্ধমান, শিল্পীর তুলিতে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছড়ার সঙ্গে সাজুয্য রেখে ছবি। সঙ্গে লেখা ছড়ার প্রথম দুই লাইন হুবহু টুকে দিয়েছে দুই দলই। পরের দুই লাইন নিজের মনের মত করে সাজিয়ে পরস্পরবিরোধী বার্তা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তৃণমূলের দেওয়ালে বা ওয়ালে লেখা হয়েছে, আতাগাছে তোতা পাখি, ডালিম গাছে মউ, মিথ্যাবাদী বিজেপিকে, ভোট দেবে না কেউ। আর বিজেপির দেওয়াল লিখন রয়েছে, আতাগাছে তোতাপাখি, ডালিম গাছে মউ, মিথ্যেবাদী তৃণমূলকে ভোট দেবেন না কেউ। সেই কবে যতীন্দ্রনাথ সরকার তাঁর হাসিখুশি বইয়ে শিশুদের জন্য লিখেছিলেন এই ছড়া। হাসিখুশি শিশুরা সেই ছড়া বলে বড়দের, বিশেষ করে বাবা-মা-দাদু-দিদাদের মুখে হাসি ফোটাত।
কিন্তু ভোটের ময়দানে সেই ছড়াকেই ব্যবহার করে রাজনৈতিকদলগুলি কারও মুখে হাসি ফোটাতে পারুক বা নাই পারুক, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার ঠিক করছে। কেউ কেউ বলছেন, নিজেদের প্রতিভার ভাণ্ডারে বোধহয় টান পড়েছে, তাই বোধহয় হাসিখুশির ছড়াটাকেও দেওয়াল লিখনে তুল আনতে হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য