মার্বেলের মতো দেখতে চোখ নিয়ে ছয় বিস্ময়

মার্বেলের মতো দেখতে চোখ নিয়ে ছয় বিস্ময়

মার্বেলের মতো দেখতে চোখ নিয়ে ছয় বিস্ময়

ছোট্ট মার্বেলের মতো দেখতে। অথচ রাজ্যের বিস্ময়ে ভরা। প্রায় আট গ্রাম ওজন আর ইঞ্চিখানেক ব্যাসের এই মানব ইন্দ্রিয়টির নাম চোখ।

আমৃত্যু চলমান রেলগাড়ি চোখ : হয়তো ভাবছেন, আপনি কেবল একটি নির্দিষ্ট জিনিসই দেখবেন। চোখ কিন্তু তা দেখবে, তবে একইসঙ্গে নিজস্ব কক্ষপথে বিচরণ করবে সে। চোখের এই গতিকে বলা হয় 'স্যাকেইডস'। মনের পর সবচেয়ে বেশি গতি সৃষ্টি করতে পারে এই আলোক-সংবেদনশীল অঙ্গ।

ঘুমের পাঁচটি ধাপের একটিকে বলা হয় র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট (আরইএম) ঘুম। যেহেতু চোখ নানা নির্দেশনায় গতিশীল থাকে। আরইএম ঘুম সারা রাত নিজস্ব চক্রের মধ্যে থাকে। চোখ স্বপ্ন দেখে এবং স্মৃতিকে সামনে হাজির করে।

না কাঁদলেও চোখে জল আসে ক্যামনে ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখ দিয়ে পানি নামলে দ্বন্দ্ব কমায়, ধ্বংস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধ করে এবং চোখের বহিরাংশে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। এ ছাড়া চোখের জল অক্ষিগোলককে শুকনো হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় ১.২ এমএল পানি তৈরি করে। তবে সে জল নাকের কাছে চোখের পাতার সীমানায় অবস্থিত ছোট গর্তের মধ্য দিয়ে চলে যায়। ফলে বিষয়টি লক্ষ্য করা হয় না। যখন আপনি কষ্ট পান, তখন উৎপন্ন জল লুকানো সম্ভব হয় না। তাই অতিরিক্ত জল গালের ওপর দিয়ে গড়িয়ে পড়ে। 

জীবনে ৫০০ মিলিয়ন বার পলক পড়ে একটি চোখে : স্বাভাবিক অবস্থায় একজন মানুষের চোখে প্রতি মিনিটে প্রায় ১৫ বার পলক পড়ে। এর মাধ্যমে অক্ষিগোলকের চারপাশে জল ছড়িয়ে পড়ে। এতে চোখ আর্দ্র থাকে এবং ধুলো বা বর্জ্য থাকলে তা বেরিয়ে আসে।

১৩০ মিলিয়ন আলোক সংবেদনশীল কোষ উৎপন্ন হয় : আকৃতি অনুসারে উৎপন্ন কোষের ১২০ মিলিয়নকে বলা হয় রড এবং বাকিগুলোকে বলা হয় কোন। রড নামের কোষগুলো ভালো কাজ করে আধো অন্ধকারে- সন্ধ্যায় কিংবা চাঁদের ম্লান আলোয়। আর কোণ-এর কাজ রং শনাক্ত করা।

রড-এর জন্য প্রয়োজন হয় ভিটামিন 'এ'। এর অভাব হলে রড-এর কার্যকারিতা হ্রাস পায়। তখন রাতে দেখতে অসুবিধা হয়।

শরীরের রোগ ভেসে ওঠে চোখে :ডায়াবেটিসের কারণে কখনো কখনো চোখের রেটিনায় দাগ দেখা যায়। উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের চোখে রেটিনার ওপর থাকা ধমনী চকচক করতে থাকে। কাটাচামচের মতো খাঁজকাটা দেখায় তা। এমন অনেক চিহ্ন চোখে ধরা পড়ে রোগের লক্ষণ হিসেবে।

চোখ আপনার মনের জানালা : কোনো সন্দেহ নেই, মানুষের আবেগ প্রকাশ পায় তার চোখে। কিন্তু আপনি কি জানেন, চোখের গতিতে জানা যায় মনের অবস্থা? 

বিশেষজ্ঞদের মতে, 'আই মুভমেন্ট ডেসেনসিটাইজেশন অ্যান্ড রিপ্রসেসিং (ইএমডিআর) একটি বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি প্রয়োগ করা হয় মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে চোখ। এ ছাড়া নানা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে মানুষ দ্বারস্থ হয় চোখের। এইসব কারণে মানুষের কাছে চোখ এক অপার বিস্ময়ের নাম। 

পাঠকের মন্তব্য