স্মৃতি ইরানি ছিলেন বিএ পাশ, হলেন উচ্চমাধ্যমিক

স্মৃতি ইরানি
২০০৪ সালে তিনি ছিলেন গ্র্যাজুয়েট। ২০১৪ সালে হয়ে গেলেন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক শুক্রবার নতুন মাত্রা পেল। এই ইস্যুতে এদিন স্মৃতিকে নিশানা করে তাঁরই জনপ্রিয় ধারবাহিকের নাম ও গান ব্যবহার করল কংগ্রেস। যা নিয়ে দিনভর মসকরা চলল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। যদিও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসবে ভাবিত নন। তাঁর কথায়, ‘আপনি কী বলছেন, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আপনি যত আমাকে অপদস্থ করবেন, আমি তত বেশি পরিশ্রম করব আমেথির মানুষের জন্য।’
বিজেপির অন্যতম এই শীর্ষস্তরের নেত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক ২০০৪ সাল থেকে চলছে। সেবার নির্বাচনী হলফনামায় স্মৃতি ইরানি জানিয়েছিলেন, ১৯৯৬ সালে দিল্লি বিশ্ববদ্যিালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি পান তিনি। আবার রাজ্যসভার ভোটে লড়তে গিয়ে স্মৃতি জানিয়েছিলেন, তিনি বিকম পার্ট ১ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার আমেথিতে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও একই কথা জানান স্মৃতি। তাঁর হলফনামার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লেখা হয়েছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওপেন লার্নিং থেকে বিকম পার্ট-১ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। পাশেই বন্ধনীর মধ্যে লেখা হয়েছে, ‘তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স সম্পূর্ণ হয়নি’। সাল ১৯৯৪। অর্থাৎ, শিক্ষাবিদদের ভাষায় তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই স্মৃতিকে তোপ দাগতে আসরে নেমে পড়ে কংগ্রেস। বিজেপি প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়ে কমিশনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলে তারা। এর জন্য স্মৃতির প্রার্থীপদ খারিজ করারও দাবি করা হয়। কংগ্রেস দাবি করে, ভুল তথ্য হলফনামায় দিয়ে স্মৃতি জনপ্রতিনিধি আইন ভেঙেছেন। তাই তাঁকে নির্বাচনে লড়তে দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার সেই আক্রমণেরই সুর আরও একধাপ চড়িয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর সরস মন্তব্য, ‘নতুন সিরিয়াল আসছে, কিঁউকি মন্ত্রী ভি কভি গ্র্যাজুয়েট থি। যার শুরুর লাইনগুনি হবে— কোয়ালিফিকেশন কে ভি রূপ বদলতে হ্যায়, নয়ে নয়ে সাঁচে মে ঢলতে হ্যায়, এক ডিগ্রি আতি হ্যায়, এক ডিগ্রি যাতি হ্যায়, বনতে এফিডেভিট নয়ে হ্যায়। অর্থাৎ, শিক্ষাগত যোগ্যতারও রূপ পাল্টায়, নতুন নতুন ছাঁচ অনুযায়ী আকার নিয়ে নেয়, এক ডিগ্রি আসে, এক ডিগ্রি যায়, নতুন নতুন হলফনামা তৈরি হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, লাগাতার ৮ বছর ধরে সম্প্রচারিত হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করা এই টিভি ধারাবাহিকটিতে শুরুর সময় এমনই একটি গান থাকত। সেই গানটিকেই অনুকরণ করে সুর এবং ছন্দ এক রেখে শুধু শব্দগুলি বদলে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্রের এই মন্তব্য সম্প্রচারিত হতেই নেটিজেনদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে যায়। কেউ প্রিয়াঙ্কাকে বছরের শ্রেষ্ঠ গীতিকার, কেউ গায়িকার তকমা দিয়ে দেন।
পাঠকের মন্তব্য