রোজা না রাখলে কি পরিমাণ শাস্তি ভোগ করতে হবে

রোজা না রাখলে কি পরিমাণ শাস্তি ভোগ করতে হবে
একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই জানা প্রয়োজন যে পবিত্র রোজা না রাখলে কি পরিমাণ শাস্তি ভোগ করতে হবে মৃত্যুর পরে কারন রোজা ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত ৫ টি ফরজের একটি তাই আসুন জেনে নেই রোযা না রাখার ভয়ানক শাস্তি সম্পর্কেঃ
যদি কেউ রোযা না রাখে তবে তার জন্য ভয়াবহ কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছেঃ হযরত আবু উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি যে তিনি বলেন, আমি ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার নিকট দুই ব্যাক্তি আগমন করলেন। উনারা আমাকে বললেন, আপনি পাহাড়ের উপরে উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারবো না। উনারা বললেন, আমরা আপনাকে সহজ করে দিবো। আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌছালাম, হঠাত ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম।
আমি বললাম, এসব কিসের আওয়াজ ? উনারা বললেন, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ। তারপর উনারা আমাকে নিয়ে এগিয়ে চললেন। হঠাত কিছু লোক পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এবং তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝড়ছে। আমি বললাম, এরা কারা? উনারা বললেন, যারা ইফতারের সময় হ্ওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলে তারা। (নাউজুবিল্লাহ) [সুত্রঃ সহীহ ইবনে খযাইমাঃ ১৯৮৬; সহীহ ইবনে হিববানঃ ৭৪৪৮;]
উক্ত হাদিস শরিফ উনার ভাবার্থ এই যে, মহান আল্লাহ পাক সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা উনার রাসুল হাবিবুল্লাহ হুযুরপাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে রোযা ভঙ্গ করার শাস্তি সম্পর্কে অবগত করেছেন। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি দেখেছেন, তাদের সেই দুরবস্থা; তাদের আকার আকৃতি ছিল বড় মর্মান্তিক এবং নিকৃষ্ট। কঠিন যন্ত্রণায় তারা কুকুর ও নেকড়ের মত চিৎকার করছে। তারা সাহায্য প্রার্থনা করছে অথচ কোন সাহায্যকারী নেই। তাদের পায়ের শেষ প্রান্তে (গোড়ালির উপর মোটা শিরায়) জাহান্নামের আঁকুশি দিয়ে কসাইখানার জবাই করা ছাগলের মত তাদেরকে নিম্নমুখী করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর তাদের কশ বেয়ে মুখভর্তি রক্ত ঝরছে। তাদের অপরাধ তারা রোযা রেখেছে কিন্তু ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলেছে।
একটি বার চিন্তা করে দেখুন রোযা রেখে ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেললে যদি এত কঠিন শাস্তি হয়, তবে যারা পূর্ণ দিন মূলেই রোযা রাখে না এবং যারা পূর্ণ মাসই রোযা রাখে না তাদের শাস্তির অবস্থা কতটা ভয়াবহ এবং কঠিন হতে পারে...!!
সুতরাং আশা করি, নাফারমান বে-রোজাদার মুসলিম সম্প্রদায় এই ভয়াবহ আজাবের কথা জেনে, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তওবা করবেন এবং অবশ্যই অবশ্যই যথাযথ নিয়মে পরিপূর্ণ রোযা রাখবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকল মুসলিমকে রমযানের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করে সহীহভাবে রোযা রাখার তৌফিক দান করুক।
পাঠকের মন্তব্য