এবার দলে বড়সড় সাংগঠনিক বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা

এবার দলে বড়সড় সাংগঠনিক বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা

এবার দলে বড়সড় সাংগঠনিক বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা

লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর এবার দলে বড়সড় সাংগঠনিক বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে যাঁরা হেরেছেন, তাঁদেরই সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি পদে বসালেন তিনি। একমাত্র কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদ্য নির্বাচিত সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। সাংগঠনিক কাঠামোয় দায়িত্ব অনেকটাই বাড়ল শুভেন্দু অধিকারীর। আগে যা দায়িত্ব ছিল, তা তো থাকছেই, জঙ্গলমহলের দায়িত্বও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর হাতেই তুলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভোটার তালিকা দেখভালের দায়িত্ব পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ভোটের পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। এমনকী, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের পার্টি অফিস দখলেরও অভিযোগও উঠেছে। আগামী সোমবারের মধ্যে দলের সমস্ত পার্টি অফিস উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে নজিরবিহীন বিপর্যয় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। একধাক্কায় আসন সংখ্যা অনেকখানি কমে দাঁড়িয়েছে বাইশে। হাতছাড়া উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের সবক’টি আসন। গেরুয়া ঝড়ে দক্ষিণবঙ্গেও বেশ কয়েকটি জেতা আসন ধরে রাখা যায়নি। হেরে গিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মানস ভুঁইয়ার মতো পোড়খাওয়া নেতারা। রাজ্যে ১৮টি আসনে জিতে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। ফলপ্রকাশের দু’দিন পর শনিবার জয়ী ও পরাজিত প্রার্থী-সহ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে সাংগঠনিক রদবদলের কথা ঘোষণা করেন তিনি।

রাজনীতির ময়দানে ঘুরে দাঁড়াতে কাদের উপর ভরসা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সত্যি কথা বলতে, মানুষ যাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন, তাঁদের হাতেই দায়িত্ব তুলে দিলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, ভোটে হারলেও তাঁরা দলের ‘সম্পদ’। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে যিনি হেরেছেন, সেই বীরবাহা সোরেন হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া জেলা সভাপতি। হুগলি জেলার সভাপতির দায়িত্ব পেলেন পরাজিত প্রার্থী ও দু’বারের সাংসদ রত্না দে নাগ। সংগঠনের কাজের সুবিধার জন্য বাঁকু়ড়া জেলাটিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হল। বিষ্ণুপুরের দায়িত্ব পেলেন শ্যামল সাঁতরা। তিনি এবার লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের কাছে হেরেছেন। আর বাঁকুড়ার বাকি অংশের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন শুভাশিস বটব্যাল। নদিয়ার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে শংকর সিং। আর কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব পেলেন সদ্য নির্বাচিত সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বর্ধমান পশ্চিম তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির দায়িত্বে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি।

লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ফল শোচনীয়। একটি আসনেও জিততে পারেননি শাসকদলের প্রার্থীরা। ভোটের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। দলবদলেও গড় রক্ষা করতে পারেননি তিনি। মোয়াজ্জেম হোসেনকে সরিয়ে মৌসমকেই মালদহের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর দিনাজপুরের নয়া জেলা সভাপতি রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়াল। দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্ব পেলেন অর্পিতা ঘোষ। বালুরঘাট কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের কাছে হেরে গিয়েছেন তিনি। 

পাঠকের মন্তব্য