টেকনাফে আশানুরুপ মুল্য পাওয়ায় খুবই খুশী পান চাষীরা

টেকনাফে আশানুরুপ মুল্য পাওয়ায় খুবই খুশী পান চাষীরা
টেকনাফে জৈব পদ্ধতিতে নিরাপদ পান উৎপাদন হচ্ছে ব্যাপকভাবে। দেশীয় জাতের পাশাপাশি মিষ্টি পানেরও চাষাবাদ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ভাল উৎপাদন হয়েছে। সেই সাথে আশানুরুপ মুল্য পাওয়ায় কৃষককুল খুবই খুশী।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের উপকুলে সীমান্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত টেকনাফ উপজেলা। কক্সবাজার জেলায় পানের জন্য মহেশখালীর পরে বিখ্যাত হচ্ছে টেকনাফ উপজেলা। টেকনাফ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাহারছড়া, টেকনাফ সদর, সাবরাং এ ৩টি ইউনিয়নে কৃষক পর্যায়ে চাষ করা হচ্ছে জৈব পদ্ধতিতে নিরাপদ পান উৎপাদন। পানকে স্বাস্থ্যসম্মত রেখে খাওয়ার উপযোগি করার জন্য টেকনাফ কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ পান উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কর্মসূচি প্রকল্পের উদ্যোগে চলতি রবি মৌসুমে চাষ করা হচ্ছে জৈব পদ্ধতিতে নিরাপদ পান।
কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তি সম্প্রসারণ তথা প্রদর্শনী স্থাপন, জৈব বালাইনাশক তৈরিকরণ প্রশিক্ষণ, কম্পোস্ট সার ব্যবহারকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে নিরাপদ পান উৎপাদন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রদর্শণীভুক্ত ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও মাঝারি পান চাষীদের মাঝে ভার্মি কম্পোস্ট, খৈল, জৈব সার, জৈব বালাইনাশক, বাঁশ, খুঁটি, বেড়া নির্মানের জন্য পলিথিন বিতরনের মাধমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও টেকনাফে পান উৎপাদন হচ্ছে অভিন্ন পদ্ধতিতে। নিরাপদ পান উৎপাদন কর্মসূচি প্রকল্প হতে কৃষকদের মাঝে এসব উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে মুরগির বিষ্টার পরিবর্তে কৃষক কর্তৃক তৈরিকৃত ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে পানকে নিরাপদ রাখার কৌশল টেকনাফের কৃষককুলে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। স্থানীয় জনগোষ্টি ও মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের চাহিদা মিটানোর পর বাইরেও রপ্তাণী করা হচ্ছে।
পান চাষীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আগে কৃষকরা পান উৎপাদনের পূর্বে মুরগির বিষ্টা ব্যবহার করতেন। এতে পানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমন পরিলক্ষিত হত। বর্তমানে পান চাষীরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্ট, কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে নিরাপদ পান উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন। অর্থ সাশ্রয়ের কথা বিবেচনা করে সুস্বাস্থ্যর প্রতি লক্ষ্য রেখে নতুন এ পদ্ধতি কৃষকরা সহজে গ্রহন করছেন।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, ‘এ বছর টেকনাফে প্রচুর পান চাষ হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে ৪৮০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে ক্ষুদ্র,প্রান্তিক, মাঝারি সব মিলে ২ হাজার ৮৮০ জন কৃষক পান চাষ করছেন। তার মধ্যে নিরাপদ পান উৎপাদন করার জন্য আগ্রহী কৃষক হিসেবে ১৫০ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তম্মধ্যে এবার মাঠ পর্যয়ে নিরাপদ পান উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় টেকনাফের স্থানীয় ৩ জন পান চাষীকে পরিক্ষামূলক ভাবে প্রদর্শণী দেওয়া হয়েছে।
প্রদর্শনীভুক্ত পান চাষীরা হলেন, টেকনাফ উপজলার বাহারছড়ার ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া গ্রামের ফরিদ আহমদ, নোয়খালী পাড়ার আব্দু সালাম, লেঙ্গুরবিলের ওসমান। প্রতি প্রদর্শনীভুক্ত কৃষককে বাশেঁর খুটি, চাউনি/মাচা করার জন্য বড় বাশঁ, খৈল, ভার্মি কম্পোস্ট, জৈব বালাইনাশক দেওয়া হয়েছে। টেকনাফে নিরাপদ পান চাষে আগ্রহী কৃষকদের কথা বিবেচনা করে আগামীতে প্রদর্শনীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প পরিচালককে অনুরোধ করা হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যতীত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পানের উৎপাদনও ভাল হয়েছে’।
পাঠকের মন্তব্য