শিশুসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ভরসা বাঁশের সাঁকোটি

বাঁশের সাঁকো
উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে তুলশীগঙ্গা নদী। এই নদীটি সোনাবাজু থেকে ঝাকড়া গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করেছে। এদের যোগাযোগ ব্যবস্হা নদীর ওপর বাঁশের সাঁকোটি। নদীর উত্তরপাড়ে সোনাবাজু আর দক্ষিণপাড়ে ঝাকড়া গ্রামের অবস্থান। প্রায় ৫ হাজার মানুষের বসবাস এখানে।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সোনাবাজু-ঝাকড়া গ্রামের মৎসজীবী ইউসুফের বাড়ির পাশে তুলশীগঙ্গা নদীর ওপর বাঁশের সাঁকোটির অবস্থান।
এই গ্রামের মানুষকে জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত ওই তুলশীগঙ্গা নদী পার হয়েই সোনাবাজু এবং উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। শুধু জীবিকার প্রয়োজনেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় এমন নয়। ঝাকড়া গ্রামের শিশুসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে তুলশীগঙ্গা নদী পাড় হতে হয়।
শিশুদের জন্য নদী পারাপার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ঝাকড়া গ্রামের মানুষের পারাপারের জন্য এলাকাবাসীর অর্থায়নে দেড়শ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। ওই সাঁকোর ওপর ভর করেই চলে তাদের জীবনযাত্রা। স্থানীয়দের অভিযোগ- এই নদীর ওপর সেতু না থাকায় ফসল উৎপাদনের জন্য কীটনাশক-বীজ আনা নেয়া করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
কোনমতে ফসল উৎপাদন করা গেলেও কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল সময় মতো বাজারজাত করতে পারেন না। একারণে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় আ.লীগ নেতা আবু হানিফ বলেন- মূলত নদীটির কারণেই গ্রাম দুটি বিচ্ছিন্ন। সোনাবাজু গ্রামের সাথে সড়ক পথে উপজেলা-জেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। ফলে এই গ্রামে, প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিএম কলেজ এবং বাজার রয়েছে।
একারণে ঝাকড়া গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ সোনাবাজু গ্রামের ওপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। ফলে দুর্ভোগ সয়েই ঝাকড়া গ্রামের মানুষদের নদী পারাপার করে চলাচল করতে হচ্ছে। সোনাবাজু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ঝাকড়া গ্রামের অনেক শিশু তার বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শিশুরা বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসে। ফলে যেকোন সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে এসব শিশু।
এছাড়া অসুস্থ রোগীরা সময়মতো চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হন। এলাকাবাসীর এই নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি বহুদিনের। সেতু নির্মাণ হলে ঝাকড়াগ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হতো।
গুদাসপুর উপজেলা উপ সহকারি প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম লিটন বলেন, বাঁশের সাঁকোতে ৫ হাজার মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের কথা শুনেছি। অচিরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে।
পাঠকের মন্তব্য