ফারহানার প্লটের আবেদন নিয়ে বিএনপিতে নতুন বিতর্ক

ফারহানার প্লটের আবেদন নিয়ে বিএনপিতে নতুন বিতর্ক
রুমিন ফারহানার প্লটের আবেদন নিয়ে বিএনপিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি । এই বিতর্কের মধ্যে দিয়ে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আরেকবার দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। যদিও রুমিন ফারহান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, তিনি এই প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করেছেন।
অপদিকে রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে নোংরা বা নেতিবাচক মন্তব্য ফেসবুকে না লেখার জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই রুমিন ফারাহানার ভূমিকা নিয়ে এখন বিএনপি ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে। এই বিষয়টির মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণিত হয়েছে যে, তারেক রহমান যেসমস্ত ব্যক্তিদের পছন্দ করছেন, যেসমস্ত ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিচ্ছেন- সেগুলো সবই ভুল, বিভ্রান্তিকর এবং দলের জন্য আত্মঘাতি।
রুমিন ফারহানার এই প্লটের আবেদন নিয়ে বিএনপির শীর্ষনেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রুমিন ফারহানার এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছেন। যে সরকার তাকে বন্দি করে রেখেছে সেই সরকারের কাছে প্লটের আবেদন করাটাকে তিনি দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ মনে করছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু তার এই নির্দেশকে থোড়াই কেয়ার করেছেন তারেক জিয়া।
তারেক জিয়া বরং রুমিন ফারহানাকে সান্তনা দিয়েছেন, তিনি যেন এই বিষয়ে ভেঙ্গে না পড়েন। তার সঙ্গে কথা বলেছেন তারেক জিয়া। রুমিনের পক্ষে অবস্থান গ্রহণের জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য দলের নেতাকর্মীদের চাপের মুখে শেষপর্যন্ত রুমিন ফারহান তার প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করেছেন। কিন্তু বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা বলেছেন যে, এখন তিনি প্রতাহার করুক আর যাই করুক না কেন তার যে লোভ সেই লোভের প্রকাশ ঘটেছে এবং সরকারের সঙ্গে যে তার গোপন আঁতাত রয়েছে সেটাও স্পষ্ট হয়েছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলতে তিনি যাননি। বরং নিজের ভবিষ্যৎ উজ্জল করার জন্যই তিনি সংসদে গেছেন এবং বর্তমান অবৈধ সরকারের কৃপা লাভের জন্য তিনি সংসদে হালুয়া রুটির ভাগ বাটোয়ারা পেতে গেছেন সেটা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। শুধু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় একা নয়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে বিএনপির প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মীর মুখে। তারা এই ঘটনাকে কিছুতে মেনে নিতে পারছেন না। রুমিনের ঘটনার মাধ্যমে বিএনপির টানাপোড়েনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপির একটি অংশ খালেদাপন্থী হিসেবে চিহ্নিত যারা খালেদার সঙ্গে সরকার বিরোধী আন্দোলন এবং খালেদার মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলনের পক্ষে। তারা এখন কোনঠাসা দলে। তারেক জিয়ার অংশ, যারা সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতে চায়। যারা তারেক জিয়া যেন বিদেশে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতে পারে সেটা নিশ্চিত হতে যায়। খালেদা জিয়ার মুক্তি তাদের কোন ইস্যু নয়। তারাই এখন বিএনপিতে শক্তিশালি। রুমিন ফারহান তারেকের পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে সংসদে গিয়েছিলেন। কাজেই, রুমিন ফারহানা যে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান না- এটা আর বিএনপির নেতাকর্মীর বিশ্বাস করতে কোন সমস্যা নেই।
পাঠকের মন্তব্য