বাবাকে এগিয়ে চলার শক্তি ও সাহস জোগান মির্জা সামারুহ

বাবাকে এগিয়ে চলার শক্তি ও সাহস জোগান মির্জা সামারুহ

বাবাকে এগিয়ে চলার শক্তি ও সাহস জোগান মির্জা সামারুহ

রাজনীতিবিদদের জীবনটা কণ্টকাকীর্ণ। পালহীন নৌকার মাঝির মতো ঝড়ের প্রতিকূলেই দাঁড় বেয়ে যেতে হয় জীবনের বেশিরভাগ সময়। উত্থান-পতন আসে, তবু মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হয়।

রাজনীতির দীর্ঘ বাক অতিক্রমের সময় ঝড়-ঝঞ্জায় অনেক সময় ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। ছেদ পড়ে স্বাভাবিক জীবনে। মন খারাপ হয়ে যায়। এমন সময় রাজনীতিবিদরা কীভাবে নিজেকে সামলে ওঠেন?

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সে কথাই জানালেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনাসভায় বিএনপি মহাসচিব জানান, দুঃসময়ে সবার আগে সাহস পান মেয়ের কাছ থেকে। সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে মুঠোফোনে মেসেজ পাঠিয়ে রাজনীতিবিদ বাবাকে এগিয়ে চলার শক্তি ও সাহস জোগান মির্জা সামারুহ।

মির্জা ফখরুলের দুই মেয়ের মধ্যে বড় সামারুহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সামারুহ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। মির্জা ফখরুলের রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা তার কাছ থেকেই আসে। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে রাজনীতিতে ও দেশের মানুষের জন্য মির্জা ফখরুলের ত্যাগ স্বীকারের বিষয়টি তুলে ধরেন সামারুহ। একাদশ নির্বাচনের আগে দেশে এসে মির্জা ফখরুলের নির্বাচনী এলাকায় বাবার পক্ষে ভোটও চান তিনি। বারবার কারানির্যাতিত মির্জা ফখরুলকে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছেন সামারুহ-ই। বাবা কোনো কারণে মন খারাপ করলে মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠান সামারুহ।
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ কন্যা মির্জা সামারুহের পাঠানো একটি খুদেবার্তা পড়ে শোনান বিএনপি মহাসচিব। বলেন, আমি যখনই একটু মন-টন খারাপ করি, তখন আমার মেয়ে ২-৩টা মেসেজ পাঠায়। আজকে সকালেই (বৃহস্পতিবার) আমাকে একটা মেসেজ পাঠিয়েছে সে। আমি তা জানাতে চাই আপনাদের- এটা খুব দরকার।

নেলসন ম্যান্ডেলার ছোট্ট একটা কথা কোড করে মির্জা সামারুহ লিখেছেন, ‘দ্য গ্রেটেস্ট গ্লোরি ইন লিভিং রাইজ নট ইন ফেভার ফেইলিং বাট ইন রাইজিং এভরি টাইম উই ফল।’ অর্থাৎ আমরা যখন পড়ে যাই, তখন উঠে দাঁড়ানোটাতেই হচ্ছে গ্লোরি। আর কোনো দিন পড়ি না- এটির মধ্যে গ্লোরি নেই। আমরা পড়ছি আবার উঠে দাঁড়াতে হবে- এটির মধ্যেই আমাদের গ্লোরি।

দেশের বর্তমান অবস্থা ও সংকট নিয়েও আলোচনাসভায় কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বলেন, আজকে চতুর্দিকে অন্ধকারে আমরা আক্রান্ত হয়েছি, আমাদের জাতিসত্তা আক্রান্ত হচ্ছে। একে রক্ষা করতে হলে, আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এবং আমাদের জনগণকে সংগঠিত করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশকে উদ্ধার করতে হবে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আওয়ামী লীগ তো সেই আওয়ামী লীগ নেই। যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে সংগ্রাম করেছে গণতন্ত্রের জন্য- সেই আওয়ামী লীগ এখন নেই। এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল যাদের নিজেদের কোনো কিছুই নেই। তারা ফ্যাসিস্ট গণবিরোধী, মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের হাত আজকে মানুষের রক্তে রঞ্জিত। তাদের পরাজিত করতে এখন যেটি দরকার তা হচ্ছে সাহস, শক্তি, মনোবল এবং এক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। যদি খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই, তা হলে অবশ্যই আমাদের সংগ্রামের দিকে যেতে হবে, আন্দোলনের দিকে যেতে হবে। সুত্র- যুগান্তর  

পাঠকের মন্তব্য