জ্বর, শ্বাসকষ্টে ২৪ ঘণ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ জনের মৃত্যু 

জ্বর, শ্বাসকষ্টে ২৪ ঘণ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ জনের মৃত্যু 

জ্বর, শ্বাসকষ্টে ২৪ ঘণ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ জনের মৃত্যু 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দুজন, নাসিরনগর উপজেলার একজন ও নবীনগর উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাত থেকে ও বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী ইউনিয়নের রূপসদী গ্রামের মধ্যপাড়ায় নিজ বাড়িতে মারা যান এক ব্যক্তি। পরে খবর পেয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আল মামুন জানান, রূপসদী গ্রামের ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট ও হার্টের রোগী ছিলেন। তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মোশরাত ফারখান্দা জেরিন জানান, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বলিঘর গ্রামের এক যুবক বুধবার  দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। এরপর এক্স রেসহ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়। ঢাকার যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সসহ সবকিছু প্রস্তুত করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল কি না তা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে থেকে মারা যাওয়া কৃষকের বাড়ি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চরছাউনী গ্রামে বলে জানা গেছে।

তার সংস্পর্শে আসা ১৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সোমবার দুপুরে ৪৫ বছর বয়সী এই কৃষকের শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সকালে তিনি বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ গতকাল বুধবার দুপুরে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই কৃষক আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যান। পরে তার শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে জানা গেছে তার শরীরে করোনাভাইরাস আক্রমণ করেনি।

অপরদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় শ্বাসকষ্টে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার জেঠাগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ওই প্রবাসীর শ্বশুরবাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ বছর বয়সী ওই প্রবাসী ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। এরপর নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন তিনি। তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে তার শারীরিক কোনো সমস্যা হয়নি। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল তিনি কিছুটা অসুস্থতা বোধ করলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার টাইফয়েড ধরা পড়ে। তবে ওই সময় করোনার উপসর্গ ছিল না। এরপর মঙ্গলবার রাতে শ্বশুরবাড়িতে তিনি শ্বাসকষ্টে মারা যান।

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রবাসী মারা গেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ওই প্রবাসীর শ্বশুরবাড়ি আমরা লকডাউন করে দিয়েছি। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না।

পাঠকের মন্তব্য