শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা সাদেক বাচ্চু

শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা সাদেক বাচ্চু
রোববার সন্ধ্যা থেকেই অস্বস্তি লাগছিল সাদেক বাচ্চুর। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় রাত সাড়ে ১১টায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল জানার পর তাঁর মূল চিকিৎসা শুরু হবে। অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা থেকেই অস্বস্তি লাগছিল তাঁর। পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। পরে রাতে সাড়ে ১১টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে, অক্সিজেনের সাহায্য শ্বাস–প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল জানার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে।
সাদেক বাচ্চু
বাংলাদেশি অভিনেতা
মাহবুব আহমেদ সাদেক
জন্ম : ১ জানুয়ারি ১৯৫৫
চলচ্চিত্র অভিনেতা, নাটক রচয়িতা, নাট্য নির্দেশক ও ডাক বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি সাদেক বাচ্চু মঞ্চনামে সর্বাধিক পরিচিত।তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিতি লাভ করলেও মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে শহিদুল আমিন পরিচালিত রামের সুমতি-তে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। ২০১৮ সালে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
আদি নিবাস চাঁদপুর, বাংলাদেশ
দাম্পত্য সঙ্গী শাহনাজ জাহান
মাহবুব আহমেদ সাদেক-এর পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলায়। তবে তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ডাক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তিন মাস পর তার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর ১৫ বছর বয়সে ডাক বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন।
চাকুরীরত অবস্থায় তিনি টি এন্ড টি কলেজ হতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি শাহনাজ জাহানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৩৩ বছর চাকুরীর পর ২০১৩ সালে তিনি ডাক বিভাগের চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করেন।
ডাক বিভাগের চাকুরী ও অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটক রচনা করেছেন। তার রচিত নাটক মুক্তধারা হতে প্রকাশিত হয়েছে।[
মাহবুব আহমেদ সাদেক ১৯৬৩ বেতারে 'খেলাঘর' নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৭২-৭৩ সময়ে তিনি 'গণনাট্য পরিষদ' নামের একটি থিয়েটারে যুক্ত হন। তিনি উম্মোচন ও প্রথম পদক্ষেপ নামের আরো দুটি থিয়েটার দলের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন। দলগুলির মধ্যে প্রথম পদক্ষেপ তার নিজের গঠিত দল। ১৯৮৪ সালে তিনি 'মতিঝিল থিয়েটার' প্রতিষ্ঠা করেন। এদলটির হয়ে তিনি এখনো নাটক রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয় করছেন। তার রচিত ও নির্দেশিত নাটকগুলির মধ্যে কাফনের পকেট নাই, কুলাঙ্গার ও ক্যাপ উল্লেখযোগ্য।
১৯৭৪ সালে তিনি টেলিভিশনে অভিষিক্ত হন। তৎকালীন বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম তার মঞ্চ অভিনয় দেখে আকৃষ্ট হন। ইমাম প্রযোজিত ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকের মাধ্যমে সাদেক টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। টেলিভিশনে তিনি ঝুমকা, পূর্ব রাত্রি পূর্বদিন সোজন বাদিয়ার ঘাট, নকশী কাঁথার মাঠ, জোনাকী জ্বলে, গ্রন্থিক গণ কহে-এর মত জনপ্রিয় নাটকসহ এক হাজারের বেশী নাটকে অভিনয় করেছেন।
টেলিভিশনে নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও অভিনয় করেছেন তিনি।
১৯৮৫ সালে রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় অভিষিক্ত হন। তার অভিনীত প্রথম দিকের চলচ্চিত্রে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ে করেন। সুখের সন্ধানে চলচ্চিত্র দিয়ে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর থেকে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরিচালক এহতেশাম-এর চাঁদনী চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।
তার মঞ্চনাম 'সাদেক বাচ্চু' এহতেশামের দেয়া। চাঁদনী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় এহতেশাম তাকে এই নাম দেন। এরপর থেকে তিনি তার মঞ্চনামে চলচ্চিত্র জগতে পরিচিতি পান। তিনি এখনো চলচ্চিত্রে সক্রিয় আছেন। মাহবুব আহমেদ সাদেক তার অভিনয় জীবনে প্রায় ৫০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে ২০১৮ সালে একটি সিনেমার গল্প চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের তালিকা
বিদ্রোহী (২০২০)
এক পৃথিবী প্রেম
চলো পালাই
বেপরোয়া (২০১৯)
প্রেম চোর (২০১৯)
ডনগিরি (২০১৯)
পদ্মার প্রেম (২০১৯)
ইন্দুবালা (২০১৯)
পলকে পলকে তোমাকে চাই (২০১৮)
ধ্যাততেরিকি (২০১৭)
বসগিরি (২০১৬)
মাটির পরী (২০১৬)
মিয়া বিবি রাজি (২০১৬)
রাজা ৪২০ (২০১৬)
পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২ (২০১৬) - মাহবুব আহমেদ
বুলেট বাবু (২০১৬)
ভালোবাসাপুর ( ২০১৬ )
ব্ল্যাক মানি (২০১৫)
আরো ভালোবাসবো তোমায় (২০১৫)
লাভ ম্যারেজ (২০১৫)
কমিশনার (২০১৫)
লাভার নাম্বার ওয়ান (২০১৫)
ভালোবাসা সীমাহীন (২০১৫)
দুই পৃথিবী (২০১৫)
মহুয়া সুন্দরী (২০১৫)
রাজাবাবু - দ্য পাওয়ার (২০১৫)
স্বপ্ন যে তুই (২০১৪)
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু (২০১৪)
ভালোবাসা জিন্দাবাদ (২০১৩)
তোমার মাঝে আমি (২০১৩)
জীবন নদীর তীরে (২০১৩)
জোর করে ভালোবাসা হয় না (২০১৩)
ঢাকা টু বোম্বে (২০১৩)
জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩)
দুর্ধর্ষ প্রেমিক (২০১২)
জিদ্দি মামা (২০১২)
বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না (২০১২)
মায়ের চোখ (২০১০)
আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০)
এক জবান (২০১০)
মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯)
মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি (২০০৯)
বধূবরণ (২০০৮)
ময়দান (২০০৭)
আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭)
কোটি টাকার কাবিন (২০০৬)
পিতা মাতার আমানত (২০০৩)
বন্ধু যখন শত্রু (২০০১)
মরণ কামড় (১৯৯৯)
কে আমার বাবা (১৯৯৯)
লাল বাদশা (১৯৯৯)
আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭)
প্রিয়জন (১৯৯৬)
ডিসকো ড্যান্সার (১৯৯৪)
সুজন সখি (১৯৯৪)
রামের সুমতি (১৯৮৫)
২০১৮ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
শ্রেষ্ঠ খলচরিত্র
সিনেমা: একটি সিনেমার গল্প
পাঠকের মন্তব্য