কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনায় নিহত ১

কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনায় নিহত ১

কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনায় নিহত ১

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনায় ছোটন অধিকারী (৫২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। রবিবার বেলা ১২টার দিকে পৌরসভার মহিলা কলেজ কেন্দ্রের অদুরে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলামের (ব্রীজ) সমর্থক বলে জানান এলাকাবাসী। এঘটনায় আহত হয়ে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই ভোটকেন্দ্রের বাইরে কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলামের সমর্থক ছোটন অধিকারীর সঙ্গে অপর কাউন্সিলর প্রার্থী সাদেকুজ্জামান দিনার (উট পাখি) আখতার হোসেন ফেকুর (পাঞ্জাবী) সমর্থকদের তর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ছোটন অধিকারী অসুস্থ হলে সৈয়দপুর ১০০ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করা করেন।

কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম সমর্থক ছোটনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করে বলেন,‘উট পাখি এবং পাঞ্জাবীর সমর্থকরা আমার সমর্থক ছোটনকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আজম আলী সরকার (৪৫) ও সবুজ হোসেন (৩০) নামে আমার অপর দুই কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’

অপরদিকে কাউন্সিলর প্রার্থী সাদেকুজ্জামান দিনার ও আখতার হোসেন ফেকু অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন,‘ছোটন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আমাদের জানামতে সে উচ্চ রক্তচাপের রোগি ছিলেন।’

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বলেন,‘৫২ বছর বয়সী ছোটন অধিকারীকে মৃত অবস্থায় তার স্বজনরা হাসপালে এনছেন।’ সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান বলেন,‘কোন কেন্দ্রে কোন ধরণের সহিংসতার খবর আমার কাছে নেই। ছেঅট অধিকারীর মৃত্যুর বিষয়ে থানায় এপর্যন্ত কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি।’

ইভিএম এ উৎসাহিত ভোটার পঞ্চম ধাপে জেলার সৈয়দপুর পৌরসভায় ভোট গ্রহন চলছে। ওই ভোট গ্রহনে পৌরসভাটিতে প্রথমবারের ন্যায় ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে। ইভিএম ব্যবস্থায় ভোট দিতে পেরে আনন্দিত ভোটারা।

পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার দেলোয়ার হোসেন (২৫) পূর্ব বোতলাগাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন সকাল সোয়া নয়টার দিকে। এবার প্রথম ইভিএম ব্যবহার করে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত তিনি। ভোট প্রদানের আনন্দে বলেন,‘ইভিএম নিয়ে অনেক কথা শুনেছিলাম। এমন কথা শুনে একটা ভিতি কাজ করেছিল আমার মধ্যে। কিন্তু বাস্তবে এসে কোন ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিলাম। ভোট প্রদানেও কম সময় লেগেছে।’

একই ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন প্রিয়া মণি (১৯)। জীবনে প্রথম ভোট ইভিএম দিয়ে দিতে পেরে আনন্দিত তিনি।

এসময় প্রিয়া মণি বলেন,‘ডিজিটালের যুগে আমার ভোট প্রদানের কাজটিও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে শুরু হলো। এতে আমি খুবই আনন্দিত।’
একই কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন লাকী খাতুন (২৫)। তিনি বলেন,‘অনেকের মধ্যে ভিতি আছে ইভিএম নিয়ে। এ নিয়ে আগে নানা কথা শুনেছিলাম। কিন্তু বাস্তবে ভোট দিয়ে সেসব কথার মিল পাইনি।’ ইভিএম-এ ভোট প্রদান খুবই সহজ বলে দাবি করেন তিনি।

পৌরসভাটিতে ভোট গ্রহন শুরু হয় সকাল আটটায়। টানা চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে রাফিকা আক্তার জাহান বেবী, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মো. রশিদুল হক সরকার, জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীতে সিদ্দিকুল আলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকে মো. নুরুল হুদা, মোবাইল ফোন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রাথী রবিউল আউয়াল রবি প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।

১৫ টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিল পদে ৮৭ জন, পাঁচটি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল পদে ২১ জন প্রার্থী রয়েছেন। ৪১টি ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদান করবেন ৯৩ হাজার ৮৯৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৪৬ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ৪৭ হাজার ১৩০ জন।

 

পাঠকের মন্তব্য