ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় বৃদ্ধ গ্রেফতার; মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে পরিবারের দাবি 

ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় বৃদ্ধ গ্রেফতার

ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় বৃদ্ধ গ্রেফতার

পটুয়াখালীর গলাচিপায় পাচঁ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে নারি ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা হয়েছে। এতে অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতেই একই এলাকার মৃত রত্তন মিস্ত্রির ছেলে দুদা মিয়া (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

এর আগে গত বুধবার ২১ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড উত্তর চরখালী গ্রামে অভিযুক্ত দুদা মিয়ার বসতঘরে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে বলে থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই শিশুর মা। তবে বৃদ্ধের পরিবারের দাবী পূর্ব বিরোধের জেরে মিথ্যা সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই শিশুর মা শারীরিক অসুস্থ হওয়ায় গত রোববার ১৮ ডিসেম্বর তার স্বামী ও ছেলে সাব্বিরকে (১৩) সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যায়। এ সময় ওই শিশুকে তার ননদ বিউটি বেগম ও খাদিজা বেগমের কাছে রেখে যায়। পরে তারা ফোন মারফত জানতে পারে গত বুধবার ২১ ডিসেম্বর দুপুরে ৪নং ওয়ার্ড উত্তর চরখালী গ্রামের একই বাড়ির দুদা মিয়া ওই শিশুকে তার বসবতঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ও ভয়ভীতি দেখায়। 

এ ঘটনা শুনে ওই শিশুর মা ও বাবা ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে এবং ঘটনার বিস্তারিত জেনে ওই শিশুকে চিকিৎসার জন্য গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে ভুক্তভোগীর মা সাথী বেগম (২৯) বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার ২২ ডিসেম্বর বিকেলে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলে গলাচিপা থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৬/২০৩ । শিশুর মা সাথী, বাবা জহিরুল ও স্বজনরা বলেন, চিকিৎসার জন্য ওই শিশুকে বাড়িতে রেখে তারা ঢাকা গিয়েছিলো। এই সুযোগে দুদা মিয়া ডেকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। 

এদিকে গ্রেফতারকৃত দুদা মিয়া শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ায় গলাচিপা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী হাসপাতালে রেফার করেন। দুদা মিয়ার স্ত্রী হাফেজা , ভাই আ. রব ও স্বজনেরা দাবি করেন মিথ্যা-সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাকে। 

তারা বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে বুধবার দুদা মিয়াকে একা পেয়ে জহিরুল বেধড়ক মারধর করে পরে তারা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। দুদা মিয়াকে ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা আরো বলেন, এর আগেও একাধিক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে দুদা মিয়া ও তার পরিবারকে ওই শিশুর বাবা জহিরুল ও তার পরিবারের লোকেরা। সেসব মামলা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃদ্ধ দুদা মিয়ার কোন সন্তান নেই, একমাত্র স্ত্রীকে নিয়ে তার বসবাস। ঘটনার দিন স্ত্রী হাফেজ খাতুন তার বাবার বাড়িতে মৃত ভাইজি কে দেখতে যান। পরিবারের লোকদের দাবি এই সুযোগে দুদা মিয়াকে একা পেয়ে বেধড়ক মারধর করে নিলা ফুলা জঘম করে জহিরুল ও তার সঙ্গীরা। 

এছাড়া তারা আরও বলেন, জহিরুলের বোন বিউটির সঙ্গে কয়েকবছর আগে সম্পর্ক করে দুদার ছোট ভাই আ. রব এর বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ৩ সন্তান রয়েছে। পরে বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ বিবাদ, হামলা, মামলা চলমান রয়েছে। আর এসবের জের ধরে ধর্ষণের ঘটনা সাজানো হয়েছে। স্বজনরা জানায় দুদা মিয়া একজন ভালো লোক, ওমরা হজ করে আসছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরে। তাছাড়া তিনি সত্তর বছরের উপরে একজন বৃদ্ধ এহেন কাজ তার দ্বারা করা সম্ভব না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবি জানান পরিবার ও স্বজনরা। 

এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েন জানান, ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে দুদা মিয়া কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

   


পাঠকের মন্তব্য