গলাচিপায় চূড়ান্ত পরীক্ষার আগেই এসএসসির প্রস্তুতিমূলক মহড়া 

 এসএসসি ও দাখিলের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা

এসএসসি ও দাখিলের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মানোন্নয়নে ও মনোবল বাড়াতে গলাচিপায় এই প্রথম ব্যতক্রমীধর্মী এক এসএসসি ও দাখিলের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষা অনুরাগী ব্যক্তিত্ব পটুয়াখালীর গলাচিপা ইউএনও'র অনন্য উদ্যোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার আগেই পাবলিক পরীক্ষার আদলে অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা। 

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) প্রথমবারের মত গলাচিপা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের যৌথ আয়োজনে ৮৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ও দখিল ২০২৩ ব্যাচের মোট ৩ হাজার ৩৯৪ জন পরিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল এর নিজ উদ্যাগে এসএসসি ও দাখিল শিক্ষার্থীদের প্রাক প্রস্তুতিমূলক সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে এ পরীক্ষা নেয়া হয়। 

জানা গেছে, গলাচিপা স্কিল ল্যাবের বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দূর করতে ও মনোবল বাড়িয়ে করোনা মহামারীর ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এতে একযোগে উপজেলার মোট ১৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে পরীক্ষা। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে ইংরেজি এবং গনিত এ দুই বিষয়ের পরীক্ষায় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট করে দুইটি বিষয়ে সময় দেওয়া হয় মোট তিন ঘন্টা। যার নম্বর ছিল দুটি বিষয়ে ৫০ করে মোট ১০০ নম্বর। সরকারি কোনো নির্দেশনা না থাকলেও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষা কর্মকর্তা ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে ইউএনও গলাচিপা নিজ উদ্যোগে এ আয়োজন করেন। এর আগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য গত ০১ ফেব্রুয়ারী শুরু করে ১০ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলে শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম। 

বোর্ড পরীক্ষার আদলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো তদারকি এবং পর্যবেক্ষণ করেন। কেন্দ্রগুলোতো মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্কুল শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গলাচিপা থানায় জমা রাখা হয় এবং পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে থানা থেকে তা সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রগুলো সরেজমিনে মনিটর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করেন আনসার ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।

ব্যতিক্রমী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরে পরীক্ষার্থীরা জানায়, এমন পরীক্ষা আগে কখনো হয়নি। ইউএনও গলাচিপার উদ্যােগে বোর্ড পরীক্ষার আগে প্রাক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা হওয়ায় অনেকটা ভীতি দূর হয়েছে। 

আর অভিভাবকরা জানায় চূড়ান্ত পরীক্ষার আদলে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেক উপকারে আসবে। এ রকম একটি মহতী উদ্যোগ নেওয়ায় ইউএনও গলাচিপাকে ধন্যবাদ জানায়। 

পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, পরীক্ষার আগেই পরীক্ষা দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি ও মনোবল বৃদ্ধি পাবে। তারা আজ পরীক্ষায়  অংশগ্রহণ করে অনেক কিছু জানতে পেরেছে যা চূড়ান্ত পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে সহায়ক হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই পরীক্ষা। ইউএনও গলাচিপার নিজ উদ্যাগে প্রশ্ন পত্র তৈরি করে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের প্রাক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষায় স্কুল প্রধান, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, এসএসসি ও দাখিল শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এখানে অনেক ভয়ভীতির বিষয় থাকে। তাই পুরো বোর্ড পরীক্ষার আদলে আমরা পরীক্ষাটা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই পরীক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দূর করা ও প্রস্তুতি যাচাই করা।

   


পাঠকের মন্তব্য