কক্সবাজারের প্রবেশদ্বারে স্থাপিত হচ্ছে ‘অপরাজেয় বঙ্গবন্ধু’ 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষ্কর্য নির্মাণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষ্কর্য নির্মাণ

স্বাধীনতার ৫২ বছরের মাথায় দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষ্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শহরের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত সাগর পাড়ের কলাতলি গোলচত্বরে গতকাল শুক্রুবার জাতির জনকের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকীর দিনে ‘অপরাজেয় বঙ্গবন্ধু’ নামের ভাষ্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

জেলা প্রশাসক এ প্রসঙ্গে বলেন, কক্সবাজার নানাভাবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত অন্যতম একটি জেলা শহর। পর্যটন শহরে ভাষ্কর্যটি স্থাপিত হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছেও এটি অন্যতম দর্শনীয় হয়ে দাঁড়াবে।

কক্সবাজার পৌরসভা ও বেসরকারি সংগঠন অপারেজয় বাংলার যৌথ উদ্যোগে ভাষ্কর্যটি স্থাপন করা হচ্ছে। কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন-‘ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অন্যতম একটি প্রিয় শহর হচ্ছে কক্সবাজার। কক্সবাজারের ইনানী, ডুলাহাজারা, রামু, সোনাদিয়াসহ এখানে বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি রয়েছে। কয়েকবছর আগে সরকারিভাবে একই স্থানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপনের জন্য টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছিল কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।’

মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় শহর কক্সবাজারে জাতির জনকের একটি ভাষ্কর্য স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। তাই সাগরের পাড়ে এবং পর্যটন শহরটির প্রবেশদ্বারে এটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি সংগটন অপারেজয় বাংলার সদস্য সচিব মিলু এইচ রহমান বলেন, ভাষ্কর্যটি নির্মাণে ৪০/৫০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। পৌরসভা ও অপরাজেয় বাংলার যৌথ অর্থ সহায়তায় এটি নির্মাণ করা হবে। আগামী ১৫ আগষ্ট এটি উদ্ভোধন করা হবে বলে তিনি আশাবাদী।

গতকাল কলাতলি গোলচত্বরে ভাষ্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্টানে উপস্থিত কক্সবাজারের জেষ্ট্য সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান-‘আমরা বহুদিন ধরে দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজারে জাতির জনকের একটি স্মৃতিফলক তথা ভাষ্কর্য স্থাপােনর দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কলাতলি গোলচত্বরের নাম বঙ্গবন্ধু চত্বর করার দাবিও জানিয়ে আসছি। ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্টানে কলাতলি গোলচত্বরের নাম বঙ্গবন্ধু চত্বর ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই কৌশলে ‘ডলফিন মোড়’ বলতে বলতে বঙ্গবন্ধু চত্বর নামটিই মুছে দেওয়ার প্রয়াস পায়।’

তিনি বলেন, জাতির জনকের অনেক স্মৃতি রয়েছে কক্সবাজারে। জীবদ্দশায় তিনি অন্তত ১৩/১৪ বার কক্সবাজারে এসেছিলেন। কলাতলি গোলচত্বর তথা বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকাটি পর্যটন শহরের প্রবেশদ্বার। দৈনিক অগণিত সংখ্যক পর্যটকের আনাগোনা এ পথেই। তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান এটি। তদুপরি জাতির জনকের ছিল একটি বিশাল হৃদয়। তাই সাগরের বিশালতার ছোঁয়ায় সাগর তীরেই তাঁর ভাষ্কর্যটি স্থাপনের দাবিটি জানানো হচ্ছিল বার বার। বর্তমান সরকারের সময় অর্থাৎ ৬/৭ বছর আগেও সদর উপজেলা পরিষদের একটি প্রকল্প ছিল কলাতলিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিফলক স্থাপনের। কিন্তু অনাকাংখিত হলেও সত্য যে, সরকারি সেই বরাদ্দকৃত টাকাও বাস্তবায়নের অভাবে ফেরৎ গেছে। সর্বশেষ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে কক্সবাজার পৌরসভা ও অপারেজয় বাংলা ভাষ্কর্যটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান-‘ষাটের দশকে আমার প্রয়াত পিতার রাজনীতিও শুরু হয়েছিল এ শহরে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে। জাতির জনকের সে অনেক স্মৃতি বিজড়িত এই শহরটিতে আজ বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষ্কর্য স্থাপনের যে উদ্যোগ বাস্তবায়িত হতে চলেছে তা এখানে আগত দেশিবিদেশি পর্যটক সহ এ প্রজন্মের জন্য বিরাট ভুমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।’

   


পাঠকের মন্তব্য