মেয়াদ পূর্ণ হবে ২৪ এপ্রিল 

‘রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত বঙ্গভবন’

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে প্রস্তুত বঙ্গভবন। টানা দুইবার পাঁচ বছর করে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, ২৪ এপ্রিল সকাল ১১টায় নতুন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন শপথ নেওয়ার পর মো. আবদুল হামিদের বিদায় অনুষ্ঠান দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হবে।

তিনি বলেন, ‘এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতিকে এত বড় বিদায় দেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ এপ্রিল দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হবে।’

রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হোন। একই বছরের ১৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি।

বঙ্গভবনের সনদ গ্রাউন্ডে বিদায়ী গার্ড অব অনার প্রদানের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। গার্ড অব অনার শেষে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি খোলা ফুলে সজ্জিত জিপে ঝর্ণা এলাকা থেকে প্রধান ফটকের দিকে যাত্রা করবেন।

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বঙ্গভবনে তার দীর্ঘ অবস্থান শেষ করে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে একটি ভিভিআইপি মোটর শোভাযাত্রায় রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় তার নতুন বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।’

সনদ গ্রাউন্ডে গার্ড অব অনার এবং প্রধান ফটকে স্যালুট গার্ড দেবে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট। অন্যদিকে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে বহন করবে সুন্দর সাজানো গাড়ি। বঙ্গভবনের সব কর্মকর্তারা দুই দলে ভাগ হয়ে গাড়ির সামনে দড়ি টেনে তারপর ধাক্কা দেবেন।

বঙ্গভবনের ভেতরে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং পিজিআর সদস্যরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেবেন এবং বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গভবনকে বিদায় জানিয়ে একটি খোলা জিপে বঙ্গভবন থেকে প্রস্থান করবেন।

গত ১৭ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সম্মানে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জানান, তিনি রাষ্ট্রপতি হলেও নিজেকে সব সময় দেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই মনে করতেন। সভাপতির পদকে দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গভবনের উন্নয়নে তার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গভবন ছিল মর্যাদার প্রতীক।’

আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ আবদুল হামিদ ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হোন। তিনি কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। আইন অনুযায়ী অবসর ভাতা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন বিদায়ী এই রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি হামিদ শুধু সংস্কার করা এয়ার রেইড শেল্টার ও বঙ্গভবন তোষাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করেননি, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তও করেন। বঙ্গভবন তোষাখানা জাদুঘরকে বাঙালির শতবর্ষের বর্ণিল ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গভবনের সমৃদ্ধ ইতিহাস সংরক্ষণ এবং তা জাতির সামনে তুলে ধরতে বঙ্গভবন তোশাখানা জাদুঘর ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

   


পাঠকের মন্তব্য