কক্সবাজারের টেকনাফে ৫ দিন পর অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্র উদ্ধার  

হিফজ খানার ছাত্র খায়রুল আমিন (১২)

হিফজ খানার ছাত্র খায়রুল আমিন (১২)

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক ছাত্রকে অপহরণ করে ৬লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবীর ৫দিন পর পুলিশ পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ৪জনকে আটক করা হয়েছে।

২১জুন ভোর সাড়ে ৫টায় টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (অপস) সহ অফিসার ফোর্সের একটি চৌকস অভিযানিক দল হ্নীলা রঙ্গিখালীর পাহাড়ি এলাকা হতে নাইক্ষ্যংখালী মৌলভী বাজারের মোঃ ইউনুছের পুত্র এবং মৌলভী বাজার ইসলামিক আজিয়া ফয়জুল উলুম হিফজ খানার ছাত্র খায়রুল আমিন (১২) কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

এই অপহরণে জড়িত হ্নীলা মরিচ্যাঘোনা বড়বিলের নুর মোহাম্মদের পুত্র মোঃ আলম (২৭), মৃত ইজ্জত আলীর পুত্র আহমদ হোসেন (৫২), আহমদ হোছনের পুত্র মোঃ পারভেজ (২০) এবং সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আজিজা খাতুন (২১) কে আটক করা হয়।এছাড়া অপহরণকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য,গত ১৬জুন শুক্রবার সকাল ১০টারদিকে ভিকটিম খাইরুল আমিন হ্নীলা ষ্টেশন হতে রঙ্গিখালীর বন্ধু ফরহাদের বাসায় যাওয়ার জন্য জনৈক আলমের টমটম গাড়ীতে উঠে। পথিমধ্যে ভিকটিম খায়রুল আমিনের বন্ধু ফরহাদ (১২) এর সাথে দেখা হয়। ফরহাদ বাজার থেকে আসার কথা ভিকটিম খায়রুল আমিনকে নিয়ে যাওয়ার টমটমে কৌশলে ফরহাদের অপর সহযোগীকে গাড়িতে তোলে। পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম খায়রুল আমিনকে টমটম গাড়ি নিয়ে রঙ্গিখালী পাহাড়ের ঢালায় নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিম খায়রুল আমিনের হাত বেঁধে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর টমটম ড্রাইভার আলম তার গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। 

ঐদিন রাত ১০টারদিকে ভিকটিম খায়রুল আমিনকে পাহাড়ের উপরে তুলে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত ১টার দিকে ভিকটিম খায়রুল আমিনকে নিয়ে একজন অপহরনকারীর বাড়িতে চলে আসে। ধৃত আজিজা খাতুন ভিকটিম এবং তার স্বামীকে খাবার খেতে দেওয়ার পর বাড়িতে রাতে আটক রাখে। পরের দিন ভোরে ফজরের আযানের সময় টম টম ড্রাইভার আলমের গাড়িতে করে অপহরনকারীরা ভিকটিমকে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে পুনরায় পাহাড়ের উপরে উঠে অবস্থান করতে থাকে এবং রাতে অপহরনকারীরা ভিকটিমকে জিম্মি অবস্থায় সামনে রেখে তার মায়ের মোবাইলে ফোন করে ৬লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। এসময় অপহরণকারীরা ভিকটিমকে গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ভিকটিমের মাকে কান্না শোনায়।

এই ঘটনায় ভিকটিমের মামা থানায় নিখোঁজ ডায়রী করার পর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়। অপহরণকারীদের অবস্থান জেনে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় দফায় দফায় পাহাড়ের উপর বিভিন্ন ঘর-বাড়ি তল্লাশী করা হয়। অপহরণকারীরা সুচতুর হওয়ায় বার বার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকায় ভিকটিমকে উদ্ধারে বিলম্ব ঘটে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হালিম জানান, থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম হেফজখানার ছাত্রকে উদ্ধার করে চিকিৎসার পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যান্য অপহরনকারীদের গ্রফতারে পুলিশী অভিযান চলমান রয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

   


পাঠকের মন্তব্য