জেনে নিন পশুর বয়স, ওজন ও দাম বের করার সহজ উপায়

কুরবানির পশুর বয়স, ওজন ও দাম

কুরবানির পশুর বয়স, ওজন ও দাম

বছরজুড়ে বাজার থেকে গরুর মাংস কেনা হয়। কিন্তু ঈদুল আজহায় কুরবানির জন্য পশু কিনতে হয়। পশু পালনে অভিজ্ঞতা না থাকায় কুরবানির পশু কিনতে গিয়ে নানা প্রশ্ন জাগে মনে।

ক্রেতা হিসেবে বাজারে যাওয়ার পর সব বিক্রেতাই তার পশুকে কুরবানির যোগ্য, ওজন বেশি এবং পশুকে ভালো বলে দাবি করেন। প্রায় ক্ষেত্রেই এ কারণে পশু কেনার পর অনেক ক্রেতা চিন্তা করেন, তিনি দামে ঠকেছেন, না জিতলেন। এবার তাহলে কুরবানির পশুর বয়স, ওজন ও দাম বের করা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

দাঁত ছাড়া পশুর বয়স জানা : শিং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গরুর বয়স বের করা সম্ভব। যদিও এটা খুব বেশি প্রয়োজনীয় নয়। গরুর শিংয়ে গোলাকার রিং থাকে। সাধারণত গরুর এক বছর বয়সের মধ্যে প্রথম রিং হয়ে থাকে। চার-পাঁচ বছর বয়সী গরুর শিংয়ে রিং থাকে পাঁচটি। তবে পাঁচ বছরের পর থেকে শিংয়ের রং কিছুটা হালকা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার আট বছর বয়সী গরুর শিংয়ের রিং নষ্ট হয়ে থাকে।

পশুর ওজন বের করার উপায় : গরু বা মহিষের ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ও বুকের বেড় পরিমাপের মাধ্যমে খুব সহজেই ওজন বের করা যায়। এ ক্ষেত্রে তুলাদণ্ডের মতো নির্ভুল ওজন বের যায় না। দৈর্ঘ্য ও বুকের বেড় পরিমাপের মাধ্যমে ওজন বের করলে প্রকৃত ওজনের থেকে ৫ শতাংশ কম-বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর সরাসরি ওজন নির্ণয়ের জন্য এ সূত্রই বেশি ব্যবহার হয়।

সমীকরণটি হচ্ছে W = {L (GXG)} / 660 । এখানে W হচ্ছে পশুর ওজন (কেজি), L হচ্ছে দৈর্ঘ্য = পশুর লেজের ওপরের পিন পয়েন্ট থেকে শোল্ডার পয়েন্ট বা পশ্চাদ্দেশের উঁচু হাড় থেকে পশুর গলার মাঝামাঝি। এখানে G হচ্ছে পশুর বুকের বেড় = সামনের দুই পায়ের পেছনের দিক বরাবর বুকের বেড়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, একটি পশুর (গরু বা মহিষ) দৈর্ঘ্য ৪০ ইঞ্চি এবং বুকের বেড় ৬৫ ইঞ্চি। তাহলে ওই পশুর ওজন হবে, {৪০ X (৬৫ X ৬৫)} / ৬৬০ = ৪০ X ৪২২৫) / ৬৬০ = ১৬৯০০০ / ৬৬০ = ২৫৬ কেজি।

এভাবে গরুর ওজন বের করার সময় অবশ্যই গরুর মাথা সমান্তরাল আছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাথা যেন নিচু করে না থাকে। কারণ মাথা নিচু করে থাকলে বুকের বেড় বৃদ্ধি পায়। আবার ফিতা বেশি টাইট বা ঢিলা হলে ওজন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

ওজন থেকে দাম বের করার উপায় : সরাসরি পশুর ওজন নির্ণয়ে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ মাংস নির্ধারণ করা হয়। যদি একটি পশুর ওজন ২৫৬ কেজি হয় তাহলে ৫০ শতাংশ হিসেবে মাংস হবে ১২৮ কেজির বেশি এবং বাকিটুকু হাড়সহ অন্যান্য জিনিস। এই ওজনের সঙ্গে বাজারে থাকা দাম গুণ করলে দাম সম্পর্কে ধারণা নেয়া সম্ভব। বাজারে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৮০০ টাকা হলে ২৫৬ কেজির ওই পশুর দাম (৮০০ X ১২৮) ১ লাখ ২৪০০ টাকা হবে। তবে পশুর রং এবং অন্যান্য কিছুর নির্ভর করে এর দাম কম-বেশি হতে পারে।

   


পাঠকের মন্তব্য