প্রধান শিক্ষক ধরা; ব্যক্তিগত অফিসে- অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল

প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দ

প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা মজিদপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মায়ের সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ব্যক্তিগত অফিসে ধরা খেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দ।

সুন্দরগঞ্জ পৌরশহরের বাহিরগোলা মোড়স্থ আল জবেদ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ওই প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দের ব্যক্তিগত অফিসে এ ঘটনা ঘটে। 

আব্দুল মান্নান আকন্দ উপজেলা প্রধান শিক্ষক কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সমকাল পত্রিকা ও গাইবান্ধা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মাধুকর পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার বিকেলে মজিদপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মাসহ অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন প্রধান শিক্ষক মান্নান আকন্দ। দীর্ঘ সময় পার হলে বিষয়টি রহস্যজনক ভেবে স্থানীয়রা ওই কক্ষে তাদেরকে আটক করেন। ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতার ভীর জমে। পরে প্রভাবশালী একটি মহলের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দ রক্ষা পান।

এনিয়ে একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যা প্রতিনিধির হাতে আসে ২৫ জুলাই রাত্রিতে।  ভিডিওতে দেখা যায়, আটককারীদের প্রতি দম্ভ দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, 'দরজা বন্ধ করাটা আমার ভুল হয়েছে। ওই মহিলা আমার পিয়নের মা। তোমরা আমাকে চেনো-না। আজকে ৩০ বছর ধরি তোমাদের সাথে থাকি, আর আজকে তোমরা আমাকে চেনো-না। তোমরা ভাবছো অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য দরজা বন্ধ করেছি। চাকরির টাকা লেনদেন বিষয়ে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে। তবে, আটককারীদের এক প্রশ্নের জবাবে ওই নারীও ভুল স্বীকার করে বলেন, 'আমার কোন অভিযোগ নাই।'

এদিকে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে কথা হয় তার স্বামীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী সুন্দরগঞ্জ গিয়েছিল বিষয়টি আমার জানা নেই। পাশ্ববর্তী জহুরুলের মোড় এলাকায় যাওয়ার কথা বলে আমার স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। 

পরে ওই নারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে ঝাড়ুদার থেকে অফিস পিয়ন হিসেবে নিযুক্ত করার বিষয়ে কথা বলার জন্য গিয়েছিলাম। খরচ বাবদ কিছু টাকা ওই প্রধান শিক্ষককে দিয়ে এসেছি।

প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান আকন্দের মুঠোফোনে কল করা হলে এসব ঘটনা অস্বীকার করে তিনি বলেন, কিছু ছেলেপেলে এমনিতেই এসেছিল; পরে সমাধান হয়েছে। বদ্ধ ঘরে আপনি নারীসহ কেন? এমন প্রশ্ন করাতে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি। 

এব্যাপারে উপজেলা প্রধান শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব খোকন বলেন, 'বিষয়টি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখবো। বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি অবশ্যই নিন্দনীয় একটি ঘটনা।'

এসব বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মমিন মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, 'বিষয়টি জানার পর আমি ওই প্রধান শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি কর্মচারীর মায়ের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ও আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে, ওই নারী তার অফিসে অন্যকাজে এসেছিলেন বলে দাবি করেন।'

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এখনো কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করেনি। কেউ যদি অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

   


পাঠকের মন্তব্য