সুফল প্রকল্পের চারা বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত রেঞ্জ কর্মকর্তা

দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত

দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত

কক্সবাজারের রামুর পানেরছড়ায় চলছে নির্বিচারে পাহাড় ও গাছ কাটা চরম আকারে বেড়ে গেছে। চারদিকে শুধু পাহাড় কর্তন, বনভূমি দখল, অবৈধ স্হাপনা নির্মাণ সহ বালি পাচার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সংঘবদ্ধ পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট পাহাড়ের মাটি ও বনের গাছ অবৈধ ভাবে কেটে ডাম্পার যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে রামুর পানেরছড়ার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকহারে পাহাড় কাটা,বালু উত্তোলন, বনভূমি দখল করে দালান, বাড়িঘর ও দোকান নির্মাণ করলেও পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা নিরবতা পালন করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বন অধিদফতরের পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প ‘টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল)’ এর সফলতা নেই কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পানেরছড়া রেঞ্জের তুলাবাগান বিটের ১৩ হেক্টর বাগানে। এই ১৩ হেক্টর বাগানে ৩২ হাজারের মতো বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ রোপন করার কথা থাকলেও তার অর্ধেক চারা রোপন করে বাগান সমাপ্তি করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত। অবশিষ্ট চারা বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করার তথ্য রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।

এমনকি সামাজিক বনায়নের ১০০ জন সুবিধাভোগীর কাছ থেকে  প্রতি দলিলের জন্য ৫০০ করে মোট ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।এবং ২০০৬ এর বাগানের ঘনত্ব কামানোর জন্য বরাদ্দকৃত ৬০ হাজার টাকা নিয়ে কোন কাজ করা হয়নি।

আরও জানা যায়, রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে পানেরছড়ার বলিপাড়ায় পাহাড় কেটে শত শত ডাম্পার মাটি পাচার করছে হেডম্যান সৈয়দ নুরের ছেলে নজরুল ইসলাম। গত রমজান মাসে এই নজরুল এর মালিকানাধীন ডাম্পার গাড়ি মাটিসহ আটক করা হয়েছিল।পরে পানেরছড়া রেঞ্জারের সহযোগিতায় গাড়িটি ছাড়িয়ে আনা হয়।এছাড়াও পাহাড় খেকো,বালু খেকো,ডাম্পার মালিক, অবৈধ স্হাপনা নির্মাণ,বনভূমি দখলকারীদের কাছে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে এই রেঞ্জ কর্মকর্তা।

স্হানীয় সূত্রে পাওয়া, উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের অভিযান তৎপরতা না থাকায় পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট মাসিক মাসোহারা দিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কেটে মাটি, বালি ও গাছ পাচার করছে।অন্যদিকে বনভূমি দখল করে বিক্রি ও স্হাপনা নির্মাণ করছে।বালি পাচার সিন্ডিকেট ও বনভূমি দখলকারীরা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করলে সব বৈধ হয়ে যায়,আর ম্যানেজ না করলে মামলা ও অভিযানের ভয়ভীতি দেখায়।বনভূমিতে প্রতিটি স্হাপনা নির্মাণে রেঞ্জ কর্মকর্তার পকেটে যায় মোটা অংকের টাকা। 

সরকারি বনভূমি হতে পাহাড় কর্তন ও মাটি সরবরাহ নিষিদ্ধ থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে একের পর এক পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও বনায়নের গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে। এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদী সংগঠন।

স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সরকারি পাহাড় ও বনায়ন রক্ষা,অবৈধ স্হাপনা সহ অবিলম্বে পাহাড় কাটা ও গাছ কাটা বন্ধের জন্য দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বলেন, এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

   


পাঠকের মন্তব্য