সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সর্বজনীন পেনশন নিয়ে অপপ্রচারে কান দেবেন না

 সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। দক্ষিণের দেশগুলোর ওপর আরোপিত সিদ্ধান্ত, বিভাজনের নীতিকে না বলার এখনই সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

গতকাল বিকালে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। 

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আগামী কয়েক মাসে দেশে কী হচ্ছে, কী হবে তার জবাব জনগণ দেবে। কিছু সমালোচক থাকবেই জানিয়ে তিনি বলেন, কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি কমই চিন্তা করি। যতদিন বেঁচে আছি জনগণের জন্য কাজ করব। কখনো পদের জন্য রাজনীতি করিনি। রাজনীতি করেছি দলের জন্য। স্কুলে পড়ার সময় রাজনীতি করেছি। কলেজের দেয়াল টপকিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছি। নেতা হতে হবে, এমন রাজনীতি করিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কেবল মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করছি না, খাদ্য উৎপাদনেও তো দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। মাছ, সবজি কোনটার অভাব আছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ এগুলো কাদের জন্য। জনগণই তো এগুলোর সুফল ভোগ করে। আগে যেখানে দু-তিন ঘণ্টা বসে থাকতে হতো, মেট্রোরেলের কল্যাণে এখন সে পথ ১০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করা হবে। জনগণের স্বার্থেই তো সবকিছু করা। তিনি বলেন, দেশে কিছু লোক থাকবেই যাদের কিছুই ভালো লাগে না। আপনারা আশা করেন কীভাবে যে, সবাই একরকম হবে এবং একসঙ্গে পথ চলবে। একটি দল আছে, তারা দেশ চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের তো মনোবেদনা থাকবেই। তাদের কাছে তো সবকিছুই খারাপ লাগবে। তাদের নিয়ে তো কিছু বলার নেই।
আওয়ামী লীগ টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ বছর আগে দেশের অবস্থা কোথায় ছিল আর আজ কোথায় আছে। এত দ্রুত সময়ে এত পরিবর্তন আনা কি সহজ কাজ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এ পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। এখন জনগণ চাইলে আমাদের ভোট দেবে। না চাইলে দেবে না। সিদ্ধান্ত জনগণকেই নিতে হবে। সফরকালে বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষিণের দেশগুলোর ওপর আরোপিত কৃত্রিম সিদ্ধান্তের কারণে আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে রাজি নই। সর্বজনীন নিয়মের নামে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অসম নীতিকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আমি দক্ষিণের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছি।

অপরাধবোধ না থাকলে বিবৃতি ভিক্ষা করেন কেন : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে শতাধিক নোবেল বিজয়ীর প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়ান কেন। যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের আহ্বান জানাই, বিবৃতি না দিয়ে বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ পাঠান, আইনজীবী পাঠান। দলিল দস্তাবেজ, কাজগপত্র ঘেঁটে দেখুন অন্যায় আছে কি না। আমি তাদের এখানে এসে তা যাচাই করার আহ্বান জানাচ্ছি। তারাই দেখে বিচার করে যাক এখানে কোনো অপরাধ আছে কি না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে মন্তব্য করে ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভদ্রলোকের এতই যদি আত্মবিশ্বাস থাকত যে, তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কে মামলা প্রত্যাহার করার। আমাদের দেশে তো আমরা চলমান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। বিচার বিভাগ স্বাধীন। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয় এবং শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যদি মামলা করা হয়, তাহলে আমাদের কি সেই হাত আছে যে মামলা বন্ধ করে দেব। এখানে আমার কোন অধিকারটা আছে বলেন। সে পাওয়ারটা (ক্ষমতা) দিয়েছেন আমাকে? জুডিশিয়ারি তো সম্পূর্ণ স্বাধীন। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটি তো আরেকটিকে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তিনি বলেন, এনবিআর যদি সে অর্থগুলো আদায় করতে যায়, আদালত থেকে স্থগিত করা হয়। তা স্থগিত হবে কেন। ট্যাক্স দেওয়াটা সব নাগরিকের দায়িত্ব। সে আমেরিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন, সে দেশের নাগরিকরা যদি ট্যাক্স ফাঁকি দেয় তাহলে কি তাদের সরকার তাদের কোলে তুলে নাচে? ফিলিপাইনে নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মামলা হয়েছে। দিনের পর দিন সে মামলায় তাঁকে লড়তে হয়েছে। এরকম বহু নোবেল লরিয়েট পরবর্তীতে অনেক কাজের জন্য কারাগারে আছেন।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, লেবার ল’ নিয়ে, লেবারের অধিকার নিয়ে তো আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়। আমাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আইএলওতে শুধু নালিশ আর নালিশ। অথচ যারা লেবারের অর্থ মেরে খেল, আইনে আছে লাভের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণে দিতে হবে। কেউ যদি সেটা না দেয় আর লেবাররা মামলা করে- মামলার কারণে তাদের যদি চাকরিচ্যুত করা হয়, সেটার জন্য যদি তারা আবার মামলা করে, সে দায় তো আমাদের নয়। আবার এ মামলা যাতে না হয় তার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়েছে, নেতারা যে ঘুষ খেয়েছে, সেটা ধরাও পড়েছে এবং সে টাকা ব্যাংকে ফ্রিজ করা হয়েছে। একটি ব্যাংকের এমডি বিলিয়ন ডলার কীভাবে বিদেশে বিনিয়োগ করেন, সে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাংকটি কিন্তু সরকারি। সরকারি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক। সরকারি বেতনভুক ব্যাংকের একজন এমডি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কীভাবে বিনিয়োগ করেন, আর বাণিজ্য করেন। এই শত জ্ঞানী যারা বিবৃতি দিলেন, তাঁরা এ কথাটা কি একবারও জিজ্ঞেস করেছেন যে, ব্যাংকে চাকরি করে কীভাবে বিদেশে এত টাকা বিনিয়োগ করলেন। ব্যবসা করলেন। কেউ কি খোঁজ নিয়েছেন। এত টাকা কোত্থেকে এলো। কীভাবে এ টাকাটা উপার্জন করলেন। আর আপনারা (সাংবাদিক) আমাদের কোনো রাজনীতিবিদ এটা করলে লিখতেন। লিখতে লিখতে কলম শেষ হয়ে যেত। দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন সবাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করতে বলছেন। এখন দুর্নীতিবাজ ধরা পড়লে পছন্দের হলে তার কোনো দোষ নেই। আর অপছন্দের হলে তাকে ভালো করে আচ্ছামতো লেখা, এই তো অবস্থা আমাদের। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের বিবৃতিতে বিচার প্রভাবিত হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আদালত প্রভাবিত কেন হবে। আদালত স্বাধীনভাবেই কাজ করবে। কে বিবৃতি দিল না দিল, সেটা আদালতের দেখার দরকারটা কী। তারা স্বাধীনভাবে চলবে। তাদের ভয় পেলে তো চলবে না। আদালত ন্যায়বিচার করবে। লেবারদের যেটা পাওনা সেটা তাদের দিতে হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও একেবারে লাফ দিয়ে পড়লেন! অন্যদিকে প্রতিদিনই আমাদের লেবার নিয়ে তারা জর্জরিত করে প্রণ। এটা হলো না, ওটা হলো না। আইএলওর প্রতিটি প্রটোকলে আমরা সই করেছি। যারা প্রশ্ন তোলেন তারা একটার বেশি কেউ করেনি। আর লেবারদের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকাটাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে জনগণের অংশগ্রহণ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে জনগণের অংশগ্রহণ। জনগণ এরই মধ্যে সব নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। জনগণের কল্যাণে, তাদের স্বার্থে কাজ করেছি।

সর্বজনীন পেনশন নিয়ে অপপ্রচারে কান দেবেন না : সর্বজনীন পেনশন নিয়ে অপপ্রচারকারীদের ‘অর্বাচীন’ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা পরশ্রীকাতরতায় ভোগে, যারা সবসময় হতাশায় ভোগে, যারা নিজেরা কিছু করতে পারে না, এ অর্বাচীনদের কথায় জনগণ যেন কান না দেয়। অপপ্রচারে যেন জনগণ কান না দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করতে এসেছে, সে ভরসাটা দেশবাসীর থাকতে হবে। তিনি বলেন, এ টাকা নিয়ে ইলেকশন ফান্ড করতে হবে, আওয়ামী লীগ তো ওইরকম দৈন্যতায় পড়েনি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে নিজের খেয়ে নৌকা। সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পায়। কিন্তু সাধারণ জনগণের কোনো পেনশনের ব্যবস্থায় নেই। বৃদ্ধ বয়সে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্যই এ সর্বজনীন পেনশনের কথাটা আমরা বলেছি। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এ ঘোষণা ছিল, যা এখন কার্যকর করেছি। কেউ এটিকে নিয়ে কোনোরকম নয়ছয় করতে পারবে না। সে নিশ্চয়তা দিয়েই তো এ স্কিম করা। দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব নেতিবাচক কথায় কান না দিয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার জন্য এবং যারা আজকে বলছে তারাই পেনশনে যোগ হবে সেটিও বলে দিতে পারি।

চেয়ে পাবে না সে অবস্থায় বাংলাদেশ নেই : ব্রিকস-এর সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখনই সদস্য পদ পেতে হবে সে ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল না। সে ধরনের চেষ্টাও আমরা করিনি। চাইলে পাব না সে অবস্থায় বাংলাদেশ নেই। আমরা কাউকে বলতে যাইনি আমাকে এখনই সদস্য করেন। তিনি বলেন, তবে প্রত্যেকটা কাজের একটা নিয়ম থাকে। আমরা সে নিয়ম মেনেই চলি। আমার সঙ্গে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হলো, আমাকে আমন্ত্রণ জানালেন ব্রিকস সম্মেলন করবেন। আমাকে আসতে বললেন। তখন আমাকে এও জানালেন তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেন। সে বিষয়ে আমার মতামতও জানতে চাইলেন। আমি বললাম এটা খুবই ভালো হবে। ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন এ পাঁচটি দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ ছিল এবং এখনো আছে। ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশ আগে থেকেই আগ্রহী ছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যখন শুনলাম নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হবে, আমাদের ওটার ওপর বেশি আগ্রহ ছিল। যখন থেকে তৈরি হয়, তখন থেকেই এ আগ্রহটা ছিল এর সঙ্গে যুক্ত হবো। ব্রিকসের সদস্য পদের ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আমাকে বললেন ধাপে ধাপে নেবেন। ভৌগোলিক অবস্থানটা বিবেচনা করে নেবেন। তিনি বলেন, আমাদের নিলে আমরা খুব খুশি। তবে ব্রিকসের এখনই সদস্যপদ পাব, প্রথমবারেই গিয়েই সদস্য পদ পাব, সে ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না। সেখানে তো সব রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে। আমরা কাউকে বলতে যাইনি আমাকে এখনই সদস্য করেন।

ব্রিকস নিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি যে, এ প্রশ্নটা আসবে। আমাদের অপজিশন (বিরোধী পক্ষ) থেকে হাঁ-হুতাশ করা হচ্ছে যে, আমরা সদস্যপদ পাইনি। বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না, এটা কিন্তু ঠিক নয়। অন্ততঃ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা দেশের মার্যাদাটা তুলে ধরেছি। সেখানে আমাদের সে সুযোগটা আছে। তারা (বিরোধী পক্ষ) বলতে পারে কারণ বিএনপির আমলে ওটাই ছিল। তাদের সময় বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের কোনো অবস্থানই ছিল না। বাংলাদেশ মানে ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, ভিক্ষার দেশ। হাত পেতে চলার দেশ। এখন সবাই জানে বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ নয়। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন মাথা উঁচু করে চলে।

বাজার সিন্ডিকেট কত শক্তিশালী দেখব : বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা কোনো কথা না। কে কত বড় শক্তিশালী আমি তা দেখব। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এমন কিছু বাণিজ্যমন্ত্রী বললে তাঁকেও আমি ধরব। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা নয়। তিনি বলেন, দেশের একটি চক্র আছে যারা সুযোগ পেলেই কারসাজি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালায়। এসব খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কিন্তু ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। সরকার থেকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে তারা দ্রব্যমূল্য কমাতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, আমরা গবেষণা করে নানা বীজ উদ্ভাবন করেছি। ফলে এখন ১২ মাসেই সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। আর তরি-তরকারি যাতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেজন্য আমরা অনেক সংরক্ষণাগার নির্মাণ করছি। আমাদের দেশ থেকে বিশ্বের অনেক দেশ সবজি কিনছে। তাই সবাই যদি কিছু উৎপাদন করি, কোনো জায়গা পতিত না রেখে কিছু উৎপাদন করলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। উৎপাদন বাড়িয়ে এবং বিকল্প ব্যবস্থা করে আমরা সিন্ডিকেট ভেঙে দিচ্ছি, আগামীতেও দেব। তিনি বলেন, এখন কিছু জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ডিমের দামও বেড়েছে। বাজারে ডিমের দাম কমলে তা সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তাহলে বহুদিন ভালো থাকবে।

শিং নেই তবুও সিংহ! ও নিয়ে চিন্তার কী আছে : সিঙ্গাপুরে বিএনপি নেতাদের বৈঠক সংত্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেসব নির্বাচন হয়ে গেল, সে নির্বাচনে কি নির্বিঘ্নে জনগণ অংশ নেয়নি। কেউ কেউ চেষ্টা করেছে, নিজেরাই গণ্ডগোল করে নির্বাচন নষ্ট করার। তারা সফল হয়নি। জনগণ ভোট দিয়েছে। আর এখন দেশে জায়গা না পেয়ে বিদেশে গিয়ে কার শিং গজাল, সেটা আমি দেখব কোথা থেকে। তারা কি শিং ধার করতে গেছে, যে গুতা মারবে কি না। কে কোথায় গেল, কী করল, ও নিয়ে আমি চিন্তা করি না। শিং নেই তবুও সিংহ! ও নিয়ে চিন্তার কী আছে।

   


পাঠকের মন্তব্য