সেপ্টেম্বর মাস বাংলাদেশের জন্য নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ

টানটান উত্তেজনাময় থাকবে এই মাস

টানটান উত্তেজনাময় থাকবে এই মাস

শোকের মাস আগস্ট শেষ হয়ে গেল। শুরু হচ্ছে সেপ্টেম্বর মাস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেপ্টেম্বর মাস বাংলাদেশের জন্য নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। টানটান উত্তেজনাময় থাকবে এই মাস। এই মাসেই নির্ধারিত হবে বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কিনা, সেই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে কিনা নাকি অন্য কিছু ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এই সবকিছু দৃশ্যমান হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। 

চার দিক থেকে সেপ্টেম্বর মাসের রাজনৈতিক গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

১. প্রধানমন্ত্রীর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রধানমন্ত্রী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। সেখানে নিশ্চয়ই বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যুটিকে প্রাধান্য দেয়া হবে এবং বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে একটি রোডম্যাপ পাওয়া যাবে। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন এবং সেখানেও তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে বাংলাদেশের অবস্থান এবং নির্বাচন ভাবনা উপস্থাপন করবেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে বিভ্রান্তি অপপ্রচার গুলো রয়েছে তা দূর করার জন্য কাজ করবেন। 

প্রধানমন্ত্রীর এই দুটি সফর যদি সফল হয় তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচনের পথে যে আন্তর্জাতিক বাধা সেই বাধা কেটে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। এর ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং অস্বস্তি রয়েছে সেটা কেটে যাবে। 

২. বিএনপির শেষ সুযোগ: বিএনপি কৌশলগত কারণেই আগস্টে বড় ধরনের কর্মসূচি দেয়নি। ইতিমধ্যে তারা একদফা আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু এই এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার পর তাদের কর্মসূচি সীমিত আছে শুধুমাত্র পদযাত্রার মধ্যে। বিএনপির বিভিন্ন সূত্র বলছে, তারা সেপ্টেম্বরে বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চায় এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তারা আন্দোলনের একটা দৃশ্যমান রূপ দিতে চায় যেন অক্টোবরের মধ্যে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে বাধ্য হয় বা পদত্যাগ করে। কাজেই সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপি বেশকিছু আগ্রাসী কর্মসূচি নিয়ে আসতে পারে এমন ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

৩. আওয়ামী লীগও শক্তি প্রদর্শন করবে: পুরো সেপ্টেম্বর জুড়ে আওয়ামী লীগ সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের জনসভা এবং জনসংযোগের কর্মসূচি দিয়ে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন এলাকায় সফরে যাবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করবে। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ একটা নির্বাচনী উত্তাপ সারাদেশে ছড়িয়ে দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেপ্টেম্বরেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রার্থীদেরকে নির্বাচনের ব্যাপারে সবুজসংকেত দিবেন। ফলে নির্বাচনের একটি আবহ তৈরি হতে পারে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

৪. আন্তর্জাতিক চাপ: সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যারা বাংলাদেশের নির্বাচন চান না এবং একটি অন্য রকম পরিস্থিতি তৈরী করতে চান তাদের আন্তর্জাতিক চাপ তীব্র হবে। এই সেপ্টেম্বর মাসেই ড. ইউনূসের বেশকিছু মামলার চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যাবে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো কি মনোভাব দেখায় সেটি বাংলাদেশের রাজনীতির ওপর বড় একটা প্রভাব ফেলবে। আর এই সবকিছু মিলিয়ে এই সেপ্টেম্বর মাসেই হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতির নির্ধারক মাস। এই মাসেই বোঝা যাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং আগামী নির্বাচন কোন পথে। 

   


পাঠকের মন্তব্য