নন্দীগ্রামে চলছে মধু সংগ্রহের উৎসব

মধু সংগ্রহ করতে ব্যাস্ত খামারিরা

মধু সংগ্রহ করতে ব্যাস্ত খামারিরা

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের রূপ ও গন্ধে মাতোয়ারা দিগন্ত। প্রতিবছরের মতো এবারো নন্দীগ্রামে সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যাস্ত সময় অতিক্রম করছে মৌ খামারিরা। 

বৃহস্পতিবার (২০ডিসেম্বর) সদর ইউনিয়নে কৃষি অফিসের উদ্যোগে তৈল জাতীয় ফসল সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের জন্য মৌ খামারিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মধু সংগ্রহ কালে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা উপপরিচালক মতলুবর রহমান, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকার্তা কাজল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অপূর্ব ভট্টাচার্য, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম,উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, শাহারুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, সুজন কুমার, প্রমুখ। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা ক্ষেতের পাশে ফাঁকা জমিতে পোষা মৌমাছির শতশত বাক্স সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মৌমাছির দল ভুভু শব্দ করে সরিষা ফুলে ঘুরেঘুরে মধু আহরণ করছে। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসে মৌ খামারিদের বাক্সে। সেখানে তাদের সংগৃহ করা মধু জমা করে আবার ফিরে যায় সরিষার ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপি মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করছে তেমন ফুলেফুলে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে ওই জমির সরিষা ফুলে পরাগায়ণ করতে সহায়তা করছে মৌমাছির দল। 

মৌ-খামারিরা জানান, একটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। আর মৌ বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রানি মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। বাক্সের মাঝখানে নিচের দিকে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে। বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। এরপর মধুচাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করেন। মৌ-খামারি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা ১৮ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য এসেছি। আশা করি ভালো পরিমাণ মধু সংগ্রহ করতে পারব।’ 

সাদ্দাম হোসেন আরও জানান, সরিষা ফুলের জন্য তাঁরা বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ, কালোজিরা ফুলের জন্য শরীয়তপুর, লিচু ফুলের জন্য দিনাজপুর ও নাটোর, কুমড়া ফুলের জন্য ঠাকুরগাঁও এবং তিলের ফুলের সময় নিজ এলাকাতেই মধু সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া ৪-৫ মাস মৌমাছিদের চিনি খাইয়ে রাখতে হয়। বছর শেষে খরচ বাদে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, যেসব সরিষাখেতে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে সেই জমিগুলোতে অন্য জমির তুলনায় ১৫-২০ ভাগ ফলন বেশি হবে। 

কারণ মৌমাছিরা ফুলে পরাগায়ন করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এলাকাবাসী অল্প মূল্যে খাঁটি মধু পাচ্ছেন।

   


পাঠকের মন্তব্য