বিএনপিকে কেন পাত্তা দিচ্ছে না দূতাবাসগুলো ?

দূতাবাসগুলোতে পাত্তা পাচ্ছে না বিএনপির নেতারা

দূতাবাসগুলোতে পাত্তা পাচ্ছে না বিএনপির নেতারা

বিএনপি এখন তৃতীয় দফায় সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন করছে। এর মধ্যে নতুন সরকার এসেছে সবকিছু বদলে গেছে। কিন্তু বিএনপি বদলায়নি। বিএনপি এখন আগের মতো করেই আন্দোলন শুরু করতে চাচ্ছে। যদিও সেই আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সায় নেই। বরং কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা এবং বিরক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু এর মাঝেই লন্ডন থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে আন্দোলন অব্যহত রাখতে হবে। 

৩০ জানুয়ারি অর্থাৎ গতকাল বিএনপি জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন উপলক্ষে কালো পতাকা মিছিল করতে চেয়েছিল। কিন্তু ঢাকার চারটি পয়েন্টের মধ্যে একটি পয়েন্টেও দাঁড়াতে পারেনি বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে বিএনপির এখনকার সক্রিয় প্রধান নেতা ড. মঈন খানকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে বিভ্রান্তি হচ্ছে। 

বিএনপি তার কর্মকৌশল জানানোর জন্য এবং বর্তমান সরকারকে কেউ যেন স্বীকার না করে, বর্তমান সরকারকে যেন অসহযোগিতা করে এজন্য বিভিন্ন দূতাবাসগুলোর সঙ্গে বৈঠক করতে চায়। কিন্তু দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পাচ্ছে না। বিএনপির জন্য সবচেয়ে হতাশার খবর হল নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাসে যাওয়া হয়নি বিএনপি নেতাদের। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস যিনি কদিন আগেও বিএনপির নেতাদেরকে সকাল-সন্ধ্যা ডাকতেন, বৈঠক করতেন, তিনি এখন বিএনপি নেতাদেরকে পাত্তা দিচ্ছেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত বিএনপি নেতাদের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কোন বৈঠকের খবর পাওয়া যায়নি। 

শুধু মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ কোন রাষ্ট্রদূতরা এখন বিএনপির সঙ্গে তেমন কথা বলতে আগ্রহী নয়। তবে নির্বাচনের পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাত করেছিল। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি রুটিন কাজের অংশ। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করছে। সেই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের জন্যই বিএনপির মনোভাব জানতে চেয়েছিল ইইউ। 

একই ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি যেটি আইআরআই এবং এনডিআই সমন্বয়ে গঠিত, তারাও বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা কেন নির্বাচনে যায়নি এবং তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায় ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চেয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে ২৮ অক্টোবর আগে বিএনপি যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আদর আপ্যায়ন পেত, এখন তার ধারেকাছেও নেই। 

বিএনপিকে কেন পাত্তা দিচ্ছে না দূতাবাসগুলো? কূটনীতিকরা এই প্রশ্নের উত্তরে মনে করছেন, নতুন একটি সরকার কেবল দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। কূটনীতিকরা নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায়। বাংলাদেশ একটি উদীয়মান দেশ। এখানে অনেক বাণিজ্যক বিষয়াদি আছে। বাংলাদেশ একটি বিরাট বাজার, এখানে নানা রকম উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। তাই সব দেশের নজর বাংলাদেশের দিকে। 

বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সুসম্পর্ক করতে চায়। আর এ কারণে পিটার ডি হাস বিএনপির চেয়ে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে বেশি আগ্রহী। অন্যান্য দেশগুলো তার ব্যতিক্রম নয়। এ রকম পরিস্থিতিতে বিএনপির মধ্যে হতাশা আরও বাড়ছে। কারণ যে পশ্চিমাদের আশায় বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল তারাই এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিএনপির কাছে থেকে।

   


পাঠকের মন্তব্য