সংঘর্ষের মধ্যেও মিয়ানমার থেকে আসছে ইয়াবা-অস্ত্র

জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ 

জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ 

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর এবং তার আশপাশের গ্রামগুলোতে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সীমান্ত চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ চলছে। বেশ কিছুদিন থেকে এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ এলাকার মানুষের ওপর। কিন্তু এই সংঘাতের মধ্যেও বন্ধ নেই মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসার কার্যক্রম। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ইয়াবা নিয়ে মাত্র ১৫ কিলোমিটার ব্যাটারি অটোরিকশা চালালেই আয় করা সম্ভব হচ্ছে অন্তত ২০ হাজার টাকা। শুধু ইয়াবা নয়, মিয়ানমার সীমান্তের এ অংশ দিয়ে আসছে অস্ত্র।

এসব অপরাধ রোধে থানার জনবল বাড়ানো ও আধুনিক প্রযুক্তির দাবি জানিয়েছে পুলিশ।

গেল ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করে পুলিশ। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ডিজেলের জেরিকেন বিশেষ কায়দায় কেটে এ ইয়াবা বহন করা হচ্ছিল। জেলের ছদ্মবেশে দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণ করে ইয়াবার এ চালান ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ।

ওই এলাকা দিয়ে প্রায় নিয়মিতই ইয়াবা চালান আনেন চিহ্নিত ব্যবসায়ীরা। বুধবার ইয়াবাসহ ধরা পড়া আসামির নামে আগেও মাদক পাচারের মামলা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ থানার ওসি ওসমান গনি জানান, অভিযান শেষে যে আসামি ধরা পড়েছেন তিনি ক্যারিয়ার ও মাদক ব্যবসায়ী। এ কারবারে জড়িত আরও তিন জনের নাম পাওয়া গেছে। অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায় এ কাজ করে স্থানীয়রা। শুধু ইয়াবা নয়, এ রুটে নিয়মিত আসছে অস্ত্র। নানা কায়দায় ক্যাম্পে অস্ত্র আনেন রোহিঙ্গারা। জেলে গেলেও বেরিয়ে এসে একই কাজ করে তারা।

পুলিশ বলছে, কয়েক বছর আগে বিপুল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর থানার জনবল বাড়ানো হয়নি। এ কারণে মাদক ও অস্ত্র চালান রোধে ডগ স্কোয়াডসহ আধুনিক প্রযুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, মাদক ধরতে ডগ স্কোয়াড বড় ভূমিকা রাখে। এ খানে ডগ স্কোয়াড থাকলে এমন অভিযানে আরও সফলতা আসবে।

উল্লেখ্য, গেল ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে শুরু হয় যুদ্ধ। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে তমব্রু রাইট ও লেফট ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। দু-তিন দিন তীব্র লড়াইয়ের পর তমব্রু ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি দখলে নেয় আরাকান আর্মি। ক্যাম্প ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন ৩৩০ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা ও বেসামরিক নাগরিক। তাদের ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সাগরপথে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

এ ছাড়া মিয়ানমারের দুই বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলিতে ৫ ফেব্রুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান। এ সময় গোলাগুলিতে আহত হন আরও নয় জন।

   


পাঠকের মন্তব্য