সোনাইমুড়ীতে জোড়া খুনের ‘বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার শেষ কোথায়’

হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মসজিদ নির্মাণকে গির্জা নির্মাণের গুজব ছড়িয়ে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে হাত পায়ের রগ কেটে, চোখ উপড়ে, জবাই করে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় সারাদেশব্যাপী শোক ও প্রতিবাদ সভা করেছে হেযবুত তওহীদ।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘দুই শহীদের খুনিরা আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে, হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হোক’- এই স্লোগানে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ ২০২৪) সন্ধ্যায় সারাদেশের ন্যায় রাজধানীর উত্তরায় শোক ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর শাখা। 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদীদের হত্যাযজ্ঞের ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এর বিচার শুরু হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন নির্মম পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের বিচার এভাবে ঝুলে থাকতে পারে না। স্বজন হারিয়ে আটটি বছর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন শহীদ খোকন ও শহীদ রুবেলের পরিবার। বিচারের নামে চলছে প্রহসন, দীর্ঘসূত্রিতা, যা বিচারহীনতারই নামান্তর। বহু আসামি এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে, প্রকাশ্যে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিচার না হওয়াতে ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও ইন্ধনদাতা ধর্মব্যবসায়ী চিহ্নিত গোষ্ঠীটি এখনো এলাকার আশেপাশে ওয়াজ মাহফিল করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টায় রত। তারা পুনরায় আরেকটি জঘন্য ঘটনার ছক কষছে। এই অপপ্রচারকারী ও হামলার চক্রান্তকারী কুচক্রী মহলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পরেছে। এদের বিরুদ্ধে এখনই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, এরা যে কোনো ধরনের তাণ্ডব সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে কেবল হেযবুত তওহীদই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমাজ, ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র। এসময় ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদীদের দ্বারা যেন আর একটা প্রাণও না ঝরে এবং দ্রুততার সাথে ইব্রাহিম রুবেল ও সোলায়মান খোকনের হত্যাকারীদের বিচারকার্য শুরু করার জোর দাবি জানান তিনি। 

সবশেষে শহীদ সোলায়মান খোকন ও ইব্রাহিম রুবেলের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়াও ঢাকার মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, আশুলিয়া সহ গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর বরিশাল, পটুয়াখালী, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, লালমনিরহাটে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

উল্লেখ্য ইতিহাসের এই দিনে বাংলাদেশের মাটিতে রচিত হয় নৃশংসতার এক কালো অধ্যায়। হেযবুত তওহীদের নির্মাণরত মসজিদকে গির্জা আখ্যা দিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার রটিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায় একটি উগ্রবাদী, ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী। তারা মসজিদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, লুটপাট চালায়। মসজিদ নির্মাণ করতে আসা হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে পৈশাচিক কায়দায় জবাই করে হত্যা করে তাদের মৃতদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। আজ সেই কালো দিন। যেদিন মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে শহীদ হয় হেযবুত তওহীদের দুইজন সদস্য। অবশ্য ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি সেখানে বর্তমানে চার তলা বিশিষ্ট সুবৃহৎ জামে মসজিদ কমপ্লেক্স। তাদের ধ্বংসের জবাবে হেযবুত তওহীদ করেছে নির্মাণ, উন্নয়ন। অবহেলিত সেই পোরকরা গ্রাম এখন স্মার্ট গ্রামে রূপ নিতে যাচ্ছে। উন্নয়নমূলক ৪২ টি প্রকল্প হাতে নেয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানা দিক থেকে পিছিয়ে থাকা গ্রামবাসী আজ শহরের সমতুল্য সেবা ভোগ করছে।

   


পাঠকের মন্তব্য